প্রযুক্তিগত দক্ষতার ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে

ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন

ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স

লিড এসিড ব্যাটারি সিসা এবং এসিডের রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করে। সিসা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ধাতু। অন্যদিকে ব্যাটারিতে থাকে অতি ক্ষয়কারী উপাদান সালফিউরিক এসিডের দ্রবণ। তাই এসিড ব্যাটারি নিয়ে কাজ করার সময় পরিবেশ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে ভাল ধারনা থাকা দরকার।

এই পোস্টে লিড বা সিসা এসিড ব্যাটারি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার সময় স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করব।

পরিবেশগত ঝুঁকি:

  1. মাটি ও পানি দূষণ: ব্যাটারির অ্যাসিড বা সিসা লিক হলে তা মাটি ও পানিতে মিশে পরিবেশ দূষণ করতে পারে। ব্যাটারি হতে উৎপন্ন SO₂ গ্যাস বায়ুমণ্ডলে পানির বাষ্পের সাথে বিক্রিয়া করে সালফিউরিক অ্যাসিড তৈরি করে, যা অ্যাসিড বৃষ্টির অন্নতম প্রধান কারণ। এটি মাটি এবং পানির pH হ্রাস করে পরিবেশের ক্ষতি করে।
  2. বায়ু দূষণ: লিড এসিড ব্যাটারি হতে উদ্ভুত প্রধান বিষাক্ত গ্যাসগুলো হলো: হাইড্রোজেন সালফাইড (H₂S) সালফার ডাইঅক্সাইড (SO₂) হাইড্রোজেন (H₂)।
    1. হাইড্রোজেন সালফাইড (H₂S): সাধারণত ব্যাটারির ইলেক্ট্রোলাইটে থাকা সালফিউরিক অ্যাসিডের (H₂SO₄) সাথে সীসার (Pb) প্রতিক্রিয়ার বিষেশ করে ওভার চার্জিং এর ফলে হাইড্রোজেন সালফাইড (H₂S) নির্গত হয়।
    2. সালফার ডাইঅক্সাইড (SO₂): লিড এসিড ব্যাটারির চার্জিং এবং ডিসচার্জিং প্রক্রিয়ায় সালফিউরিক অ্যাসিড থেকে সালফার ডাইঅক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হতে পারে।
    3. হাইড্রোজেন গ্যাস (H₂): সিসা এসিড ব্যাটারি চার্জিং এর সময় হাইড্রোজেন গ্যাস তৈরি করতে পারে, যা খুবই দাহ্য এবং মারাত্মক বিস্ফোরক। 
    4. সালফিউরিক অ্যাসিড ভাপ/বাষ্প: সিসা এসিড ব্যাটারি সাধারণত সালফিউরিক অ্যাসিড দিয়ে পূর্ণ থাকে। ব্যাটারি যদি লিক বা বিস্ফোরণ হলে সালফিউরিক অ্যাসিডের ক্ষতিকর ভাপ/বাষ্প পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য বিপজ্জনক এবং ত্বকের সংস্পর্শে এসেও ক্ষতি করতে পারে।
  3. তাপ: অতিরিক্ত গ্যাস নির্গমন ব্যাটারির তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা বিস্ফোরণ বা আগুনের ঝুঁকি তৈরি করে।

স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি:

  1. শ্বাসকষ্ট: ব্যাটারি অ্যাসিডের ধোঁয়া বা গ্যাস শ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে তা শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের ক্ষতি ও অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
    1. SO₂ গ্যাস শ্বাস গ্রহণ করলে শ্বাসকষ্ট, কাশি, এবং ফুসফুসে প্রদাহ হতে পারে।
    2. H₂S গ্যাসের স্বল্পমাত্রায় শ্বাস গ্রহণ করলে মাথাব্যথা, বমি, শ্বাসকষ্ট, এবং চোখে ও নাকে জ্বালার অনুভূতি হতে পারে। এই গ্যাসে উচ্চমাত্রায় শ্বাস গ্রহণ করলে এটি মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
    3. সালফিউরিক অ্যাসিডের বাষ্প শরীরে ত্বক, চোখ এবং শ্বাসনালীতে গুরুতর ক্ষতি করতে পারে।
  2. রক্তস্বল্পতা ও নিউরোলজিক্যাল সমস্যা: দীর্ঘমেয়াদে লিডের সংস্পর্শে এলে রক্তস্বল্পতা ও স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
  3. ত্বক ও চোখে ক্ষতি: অ্যাসিড চোখে গেলে তা গুরুতর চোখের ক্ষতি সৃষ্টি করতে পারে। ব্যাটারির সালফিউরিক অ্যাসিড ত্বকে লাগলে তা জ্বালা-পোড়া বা রাসায়নিক দগ্ধ সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া ব্যাটারিতে লেগে থাকা ডাস্ট কাপড়ে লাগলে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এই ডাস্ট হাতে বা ত্বকে লাগলে এসিডের মতোই জ্বালাপোড়া বা ক্ষত তৈরি করতে পারে।
  4. বৈদ্যুতিক শক: ব্যাটারি থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ শক লাগতে পারে যা গুরুতর আঘাত বা মৃত্যু ঘটাতে পারে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা:

  1. সঠিক রিচার্জিং পদ্ধতি: ব্যাটারিকে ওভারচার্জিং থেকে রক্ষা করতে উন্নত চার্জিং কন্ট্রোলার ব্যবহার করা প্রয়োজন।
  2. ওভারলোড কন্ট্রোলার এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  3. বায়ুচলাচল: লিড এসিড ব্যাটারি যেখানে থাকে সেই কাজের জায়গায় ভালোভাবে বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
  4. সুরক্ষা সরঞ্জাম: লিড এসিড ব্যাটারি রক্ষণাবেক্ষণের সময় নিরাপত্তা চশমা, গ্লাভস, অ্যাসিড-প্রতিরোধী এপ্রোন এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া গ্যাস নির্গমন পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য সেন্সর ব্যবহার করা যেতে পারে।
  5. দুর্ঘটনা মোকাবেলা ব্যবস্থা: অ্যাসিড দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হলে ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি ও ফার্স্ট এইড কিট রাখা।
  6. ব্যবহৃত নষ্ট ব্যাটারি সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করতে হবে যাতে পরিবেশ দূষণ না হয়।

লেড-এসিড ব্যাটারি ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের সময় এসব বিষয় মাথায় রাখা জরুরি, যাতে এর ক্ষতিকর প্রভাব এড়ানো যায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Attention Please

Purpose of this blog
Learning and Sharing is the main purposeof this site. If you find anything helpful, please, share this blog to your friends to help them.

Our FB group AMIE Help Center
Our Another Site Voltage Facts