বাইপোলার ট্রানজিস্টর (NPN অথবা PNP) এর ক্ষেত্রে সঠিক বায়াসিং পয়েন্ট সাধারণত লোড লাইন বরাবর "সম্পূর্ণ অন" এবং "সম্পূর্ণ অফ" অপারেশন দুটির মধ্যে কোথাও থাকে। এই কেন্দ্রীয় অপারেটিং পয়েন্টেকে সাধারনত কুইসেন্ট অপারেটিং পয়েন্ট বলা হয় যা সংক্ষেপে Q-পয়েন্ট নামে পরিচিত।
অতিরিক্ত ভোল্টেজ ও কারেন্টের মাধ্যমে যদি Q-পয়েন্ট সেট করা হলে অ্যামপ্লিফায়ারেরে আউটপুট পিক-টু-পিক ভোল্টেজ সাপ্লাই ভোল্টেজ(Vcc) অতিক্রম করতে চাইবে, ফলে সিগনালের উভয় হাফ সাইকেল (পজেটিভ হাফ সাইকেল ও নেগেটিভ হাফ সাইকেল) কাটা পরবে এবং ডিসটর্টেড আউটপুট পাওয়া যাবে। আবার বায়াসিং যথাযথ না হয়ে কম/বেশি হলেও সমস্যা রয়েই যাবে। অর্থাৎ ইনপুট সিগনালের পজিটিভ/নেগিটিভ হাফ সাইকেলের জন্য আউটপুট কর্তিত অবস্তায় পাওয়া যাবে। চিত্রে বিষয়টি উপস্থাপন করা হল।
তাই যথাযথ অপারেটিং পয়েন্ট নির্ধারনের জন্য উপযুক্ত বায়াসিং রেজিস্টার ও কালেক্টর রেজিস্টার নির্বাচন করা আবশ্যক, যাতে সঠিক ইনপুট কারেন্ট ও কালেক্টর ভোল্টেজ সরবরাহ করা সম্ভব হয়।
তাই বাইপোলার ট্রানজিস্টর ব্যবহার করে অ্যামপ্লিফায়ার ডিজাইনের ক্ষেত্রে সঠিক বায়াসিং রেজিস্ট্যান্স ও কালেক্টর রেজিস্ট্যান্স নির্বাচন করাই অর্থাৎ সঠিক অপারেটিং পয়েন্ট নির্বাচন করাই মূল চ্যালেঞ্জ।
বায়াসিং এর ফলে যখন একটি বাইপোলার ট্রানজিস্টর এর কিউ পয়েন্ট এর লোড লাইনের মাঝের কাছাকাছি কোথাও থাকে অর্থাৎ কাট অফ এবং স্যাচুরেশন রিজিয়নের প্রায় মধ্যবর্তী কোথাও থাকে তখন এটি একটি ক্লাস এ এমপ্লিফায়ার হিসেবে কাজ করে। কোন এমপ্লিফায়ারে এই ধরনের Q-point থাকার ফলে ইনপুটে প্রদত্ত সিগন্যালের 360 ডিগ্রির জন্যই আউটপুটে অবিকৃত সিগন্যাল পাওয়া যায়।
তাই আজ আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে, কিভাবে এই Q-point কে বায়াসিংয়ের মাধ্যমে সেট করা যায়?
সাধারণভাবে ক্লাস-এ অ্যামপ্লিফায়ারের ক্ষেত্রে ধরা হয়:
VE = VCC X 10%
VCE = VCC X 50% এবং
VRC = VCC X 40%
VBE = 0.7 Volt (সিলিকন ট্রানজিস্টরের জন্য)
এখন IB, IC ও IE এর মান জানা থাকলে সহজেই রেসিস্টর গুলোর মান বের করা যাবে। এক্ষেত্রে,
IC = βIB এবং
IE = IB + IC = (1+β)IB
এখন,
RC = VRC/IC
RE = VE /IE
তাহলে IB এর মান জানা থাকাটা দরকার। সাধারনত IB এর মান সিগনাল সোর্সের বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে।
এতকিছু করার পর মনে হতে পারে সব কাজ শেষ। না দাদা আমি বলব আরেকটু ধৈর্য ধরে পড়তে কারণ, এতকিছু করার পর যা হলো তা শুধু ডিসি সিগন্যাল বা খুব কম ফ্রিকোয়েন্সির সিগন্যাল অ্যামপ্লিফাই করার জন্য যথেষ্ট।
এমপ্লিফায়ারে সিগন্যাল কাপলিং এবং ডি-কাপলিং এর যথাযথ ব্যবস্থা থাকতে হবে। নতুবা ইনপুট অথবা আউটপুটের সাথে সংযুক্ত সার্কিট দ্বারা বায়াসিং প্রভাবিত হতে পারে। এজন্য সাধারণত ক্যাপাসিটর অথবা ট্রান্সফর্মার ব্যবহার করে কাপলিং এবং ডি-কাপলিং এর ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে সরাসরি কাপলিং করা হয়, যাকে ডিরেক্ট কাপলিং বলে। এক্ষেত্রে কাপলিং এর ফলে যাতে বায়াসিং এর কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
ইলেকট্রনিক সিগন্যাল এক সার্কিট হতে অন্য সার্কিটে প্রধান করার প্রক্রিয়াকে কাপলিং বলে।
সিগন্যাল এক সার্কিট হতে অন্য সার্কিটে যেতে বাধা দেওয়ার প্রক্রিয়াকে ডি-কাপলিং বলে।
যে ক্যাপাসিটর এর মাধ্যমে কাপলিং বা ডি-কাপলিং করা হয় তাকে কাপলিং বা ডি-কাপলিং ক্যাপাসিটর বলে।
এছাড়াও একটি বাইপাস ক্যাপাসিটার, CE ইমিটার রেজিস্টরের আড়াআড়িতে সংযুক্ত করা হয়। এই ক্যাপাসিটারটি কার্যকরভাবে ডিসি বাইসিং কারেন্টের জন্য ওপেন সার্কিট হিসেবে কাজ করে, যার অর্থ বাইসিং কারেন্ট এবং ভোল্টেজ প্রভাবিত হয় না। ক্যাপাসিটর সংযোজনের ফলে Q-পয়েন্টের স্থায়িত্ব বজায় থাকে। সাধারণত, বাইপাস ক্যাপাসিটার, CE এর মান এমনভাবে নির্বাচন করা হয় যাতে ক্যাপাসিটিভ রিয়্যাকট্যান্সের মান সার্কিটে ব্যবহৃত সিগন্যালের সর্বনিম্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে কমপক্ষে RE এর দশ ভাগের এক ভাগ হয়।
আজ আর না। পরবর্তি পোস্টে আরও বিস্তর আলোচনা করব। আমাদের সাথেই থাকুন আর কোন সমস্যা হলে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কমেন্ট এবং শেয়ার করলে বুঝতে পারি লেখা ভাল হয়েছে এবং অনুপ্রেরণা পাই।
ভাই এ্যাপ্লিফায়ার বলে কি কোন যন্ত্র হয় নাকি ট্রানজিস্টর সহযোগে এটা একটা সার্কিট?
উত্তরমুছুনইলেকট্রনিক অ্যামপ্লিফায়ার একটি ডিভাইস তবে এটা ব্যাসিক কোনো ইকুয়েপমেন্ট না। ট্রানজিস্টর, ভেকুয়াম টিউব বা অপ-অ্যাম্প ব্যবহার করে এটি তৈরি করা হয়ে থাকে।
উত্তরমুছুন