আপাত পাওয়ার, একটিভ পাওয়ার, রিয়্যাকটিভ পাওয়ার:
সাধারণভাবে আমরা ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার বলতে কোন সার্কিটে প্রয়োগকৃত ভোল্টেজ এবং প্রবাহিত কারেন্টের গুণফলকে বুঝে থাকি। কিন্তু এসি পাওয়ার সিস্টেমে এটি শুধু আপাত পাওয়ার(Apparent Power) মাত্র, যাকে সাধারনত S দ্বারা প্রকাশ করা হয় এবং এর একক হচ্ছে VA ( ভোল্ট-অ্যাম্পিয়ার )।সার্কিটের প্রকৃত পাওয়ার হচ্ছে রেজিস্টিভ এলিমেন্টের জন্য যে পাওয়ার ব্যয় হয়। একে সাধারণত P দ্বারা প্রকাশ করা হয় এবং এর একক হচ্ছে watt.
অন্যদিকে সার্কিটের রিয়্যাকটিভ এলিমেন্টের (যেমন ইন্ডাক্টর এবং ক্যাপাসিটর) জন্য যে কারেন্ট প্রবাহিত হয়, তা রিয়্যাকটিভ পাওয়ারের জন্য দায়ী। রিয়্যাকটিভ পাওয়ারকে সাধারণত Q দ্বারা প্রকাশ করা হয় এবং এর একক হচ্ছে VAR(Volt-Ampere-Reactive).
এই তিনটি পাওয়ার কে সাধারণত নিম্নোক্ত সমীকরণের সাহায্যে প্রকাশ করা হয় এবং পাওয়ার ভেক্টর ডায়াগ্রাম নিচে দেখানো হলো।
S2 = P2 + Q2
উপরের চিত্র হতে দেখা যাচ্ছে যে অ্যাপারেন্ট পাওয়ার এবং অ্যাক্টিভ পাওয়ার এর মধ্যবর্তী কোন হল θ, যা মূলত সার্কিটে উপস্থিত রিয়্যাকটিভ এলিমেন্টের জন্য উৎপন্ন ভোল্টেজ এবং কারেন্টের মধ্যবর্তী ফেজ অ্যাঙ্গেল। এই ফেজ অ্যাঙ্গেলের কোসাইন মানকে পাওয়ার ফ্যাক্টর বলে। অর্থাৎ পাওয়ার ফ্যাক্টর হচ্ছে Cosθ. এই Cosθ-র মান এক্টিভ পাওয়ার এবং অ্যাপারেন্ট পাওয়ার অথবা ভোল্টেজ এবং কারেন্টের ফেজ এঙ্গেলের উপর নির্ভর করে –1 থেকে +1 পর্যন্ত যে কোন সংখ্যা হতে পারে। তাহলে আমরা পাই,
আপাত পাওয়ার, S = VI VA
একটিভ পাওয়ার, P = VI cosθ Watt এবং
রিয়্যাকটিভ পাওয়ার, Q = VI sinθ VAR
পাওয়ার ফ্যাক্টর ইমপ্রুভ কেন করা হয়?
মুলত সার্কিটের রেজিস্টিভ উপাদান প্রকৃত পাওয়ার ব্যয়ের জন্য দায়ী। আর রিয়্যাক্টিভ উপাদান অনাকাঙ্ক্ষিত রিয়্যাক্টিভ কারেন্ট তৈরির জন্য দায়ী যা প্রকৃতপক্ষে কোন পাওয়ার খরচ করে না। Cosθ-র মান হ্রাস পেলে সার্কিটে এই অযাচিত কারেন্টের মান বৃদ্ধি পায়। তাই কারেন্টকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পাওয়ার ফ্যাক্টর অর্থাৎ Cosθ ইমপ্রুভ করা দরকার।কারেন্ট বাড়লে সার্কিটে রেজিস্টিভ লস যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি সার্কিটে ব্যবহৃত অন্যান্য উপকরন যেমন- ক্যাবল, সার্কিট ব্রেকার, ফিউজ ইত্যাদি বর্ধিত কারেন্টের কথা চিন্তা করে নির্বাচন করতে হয়। ফলে ব্যবহারকারীকে অপেক্ষাকৃত বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়।
এতো শুধু স্থাপনা ( ইন্সটলেশন ) ব্যয়, যা গ্রাহকের এককালীন খরচ। এছাড়া প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিলের সাথে পাওয়ার ফ্যাক্টর ইমপ্রুভমেন্ট পেনাল্টি হিসেবে গ্রাহকে অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করতে হয়। অবশ্য এ পেনাল্টি শুধু শিল্প ও কলকারখানার গ্রাহকদের জন্য প্রযোয্য; আবাসিক গ্রাহকদের এ অতিরিক্ত বিল দিতে হয় না।
অপরদিকে উল্লেখিত অযাচিত রিয়্যাক্টিভ উপাদান কারেন্ট যে রেজিস্টিভ লস বৃদ্ধি করে তা মূলত তাপশক্তি হিসেবে প্রকাশ পায়, যা সিস্টেমের স্থিরতা নষ্ট করে।
পাওয়ার ফ্যাক্টর এর মান কত হওয়া উচিত
এক্ষেত্রে আমরা জানি যে, ইন্ডাক্টিভ রিয়্যাকট্যান্স ভোল্টেজের চেয়ে ল্যাগিং কারেন্ট এবং ক্যাপাসিটিভ রিয়্যাকট্যান্স লিডিং কারেন্ট তৈরি করে। বাসা বাড়ি এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল বিভিন্ন ব্যবহারের প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ইন্ডাক্টিভ লোডের পরিমাণই বেশি। এর ফলে পাওয়ার ফ্যাক্টরের যে ক্ষতি সাধিত হয় তা হ্রাস করতে হলে লোডের আড়াআড়িতে ক্যাপাসিটর ব্যবহার করে পাওয়ার ফ্যাক্টর উন্নতি করতে হয় (এছাড়া সিনক্রোনাস মোটর ব্যবহার করেও পাওয়ার ফ্যাক্টর ইমপ্রুভ করা যায়)।পাওয়ার ফ্যাক্টরের মান উন্নতি করে যদি ১ করা সম্ভব হয়, তাহলে সিস্টেম সবচেয়ে বেশি স্থিতাবস্তা প্রাপ্ত হয়। তবে ব্যবহারিক সার্কিটের ক্ষেত্রে তা করা সম্ভব হয়ে উঠে না। এক্ষেত্রে পাওয়ার ফ্যাক্টরের মান 0.95-0.98 এর মধ্যে রাখতে পারলে ভালো এবং তা সিস্টেমের জন্য সবচেয়ে সাশ্রয়ী হয়।
পাওয়ার ফ্যাক্টর ইমপ্রুভ করার কৌশল
আপাত পাওয়ার, ল্যাগিং পাওয়ার, লিডিং পাওয়ার |
ধরি, কোন সার্কিটে Cosθ1 পাওয়ার ফ্যাক্টরে S1 পরিমান অ্যাপারেন্ট পাওয়ার খরচ হচ্ছে, অ্যাক্টিভ পাওয়ার,
P = S1 cosθ1
বা, S1 = P/cosθ1
এবং রিয়্যাক্টিভ পাওয়ার,
Q1 = sqrt(S12 – P2) = S1 sinθ1 = VI1 sinθ1
আবার, উক্ত পাওয়ার ফ্যাক্টর, Cosθ1-কে ইম্প্রুভ করে Cosθ2 করার জন্য সার্কিটের প্যারালালে একটি ক্যাপাসিটর, C সংযোগ করায় অ্যাপারেন্ট পাওয়ার ও রিয়্যাক্টিভ পাওয়ার পরিবর্তন হয়ে S2 ও Q2 হবে,
পাওয়ার ফ্যাক্টর ইম্প্রুভ করার কৌশল |
অতএব, S2 = P/Cosθ2
এবং Q2 = S2 sinθ2
সুতরাং Q = (Q1 – Q2)
বা, Q = (S1 sinθ1 – S2 sinθ2) = (P sinθ1/Cosθ1 – P sinθ2/Cosθ2)
= P(tanθ1 – tanθ2) VAR পাওয়ারের ক্যাপাসিটর সার্কিটের প্যারালালে সংযোগ করতে হবে।
উল্লেখ্য ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার সিস্টেমে পাওয়ার ফ্যাক্টর ইমপ্রুভ করার জন্য সাধারণত যে সকল ক্যাপাসিটর ব্যবহার করা হয় তাতে VAR এককে রিয়্যাক্টিভ পাওয়ারের মান উল্লেখ থাকে।
আবার, Q = V2/XC যেখানে, ক্যাপাসিটিভ রিয়্যাকট্যান্স, XC = 1/2πfC
বা, Q =2πfCV2
বা, C = Q/2πfV2
এভাবে সূত্রের মাধ্যমে পাওয়া মানের ক্যাপাসিটরকে সার্কিটের প্যারালাল এ সংযুক্ত করলে পাওয়ার ফ্যাক্টর ইমপ্রুভ হবে।
পরবর্তী পোস্টে চেষ্টা করব- পাওয়ার ফ্যাক্টর ইম্প্রুভ করার জন্য ক্যাপাসিটর পাওয়ার সিস্টেমের কোথায় সংযোগ করলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা করতে। আশা করি সাথেই থাকবেন।
ওভারঅল লেখাটা ভাল ছিল তবে একটি উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করলে আরেকটু ভালো হইতো। উদাহরণ দিয়ে বোঝানোর জন্য অনুরোধ রইল। ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুনthanks
উত্তরমুছুনDhonnobad bro
উত্তরমুছুনস্বাগতম
মুছুনআমার বাসায় পাউয়ার ফেক্টর কত আছে এবং একে. ৯৫ কিভাবে করব???
উত্তরমুছুনবাসাবারিতে সাধারণত পাওয়ার ফ্যাকটর মাপার প্রয়োজন পরে না। আর মেপে বের করতে হলে ভোল্টেজ, কারেন্ট, পাওয়ার মেপে তারপর, cos A = ${পাওয়ার}/{ভোল্টেজ × কারেন্ট}$ সুত্র ব্যবহার করে বের করতে পারবেন। আর এটা উন্নতি করতে হিসেব আনুযায়ী ক্যাপাসিটর ব্যবহার করতে হবে।
মুছুনGood
উত্তরমুছুনThank you.
মুছুনnice
উত্তরমুছুনThank you.
মুছুন