প্রযুক্তিগত দক্ষতার ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে

ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন

ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স

পদার্থের পরমাণুর শেষ কক্ষপথের ইলেকট্রন সমূহ ইলেকট্রিক্যাল কারেন্ট পরিবহন করে থাকে। এ কারেন্ট পরিবহন করতে শেষ কক্ষপথে অবস্থিত ইলেকট্রনসমূহের শক্তিস্তরে রদবদল ঘটতে হয়। ইলেকট্রনের শক্তির ব্যান্ড তত্ত্বের সাহায্যে  এ পরিবর্তন ব্যাখ্যা করা যায়। আজকের পোস্টের বিষয়বস্তু হলো "পরিবাহী, অর্ধপরিবাহী ও ইনসুলেটরের বিভিন্ন প্রকার এনার্জি ব্যান্ড এবং এগুলোর মধ্যে পার্থক্য ব্যাখ্যা করা" । চলুন তাহলে পদার্থের ব্যান্ড তত্ত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।

কঠিন বস্তুর মধ্য দিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহ ব্যাখ্যা করার সময় কোন একক কণাকে পৃথক ভাবে চিন্তা করা যায় না। একক বা বিচ্ছিন্ন পরমাণুর ইলেক্ট্রনগুলি পরমাণু কক্ষপথে ভিন্ন ভিন্ন শক্তির স্তরে ঘুরতে থাকে। এক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক পরমাণু একত্রিত হলে, তাদের পারমাণবিক কক্ষপথ ওভারল্যাপ হওয়ার কথা! কিন্তু পলির বর্জন নীতি অনুযায়ী এভাবে একত্রিত পরমাণু গুলোর মধ্যে একই কোয়ান্টাম সংখ্যার একাধিক ইলেকট্রনের অস্তিত্ত্ব সম্ভব না। ফলে  অসীম সংখ্যক  একই পরমাণু দিয়ে গঠিত কোন বস্তুর  ইলেকট্রন সমূহ অসীম সংখ্যক শক্তির অরবিটালে অবস্থান করবে। একটি অনুমোদিত রেঞ্জের মধ্যে পাশাপাশি দুটি শক্তিস্তরের শক্তির পার্থক্য খুবই কম হয়ে থাকে যা কোন গ্রাফ পেপারে অংকন করলে পট্টি বা ব্যান্ডের মত মনে হবে। এই ব্যান্ডের প্রশস্ততা নির্ভর করে আন্তঃ পারমানবিক দূরত্বের উপর।

উল্লেখ্য উপরে বিবৃত ঘটনাটি পরমাণুর শেষ কক্ষপথের বা যোজন  ইলেকট্রনের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় মাত্রায় ঘটে থাকলেও ভেতরের ইলেকট্রনসমূহের ক্ষেত্রে এ পরিবর্তন খুবই নগণ্য। ফলে ভেতরের ইলেকট্রনসমূহের এনার্জি ব্যান্ডের প্রশস্ততা খুবই সরু হয়।

কঠিন বস্তু বা ক্রিস্টালের মধ্যে অবস্থানকালে পরমাণুর কক্ষপথের ইলেকট্রনসমূহ পলির বর্জন নীতি অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন শক্তির অরবিটালে অবস্থান করে। ক্রিস্টলে থাকা কোন পরমাণুর একটি ইলেকট্রনের সম্ভাব্য শক্তিস্তরের অবস্থান নিচের চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলো।


এখানে a হচ্ছে কোন পদার্থের আন্তঃ পারমানবিক দূরত্ব। চিত্রে a, আন্তঃ পারমানবিক দূরত্ব বিশিষ্ট কোন পদার্থের শেষ কক্ষপথের ইলেকট্রনের সমূহের বিভিন্ন প্রাকার এনার্জি ব্যান্ড দেখানো হয়েছে।

ভ্যালেন্স ব্যান্ড

শেষ কক্ষপথের ইলেকট্রন গুলো প্রাথমিকভাবে (0K তাপমাত্রায়) অনুমোদিত যে শক্তির রেঞ্জের মধ্যে অবস্থান করে তাকে ভ্যালেন্স ব্যান্ড বলে। এ ব্যান্ডে থাকা ইলেকট্রনসমূহকে ভ্যালেন্স ( বা যোজন ) ইলেকট্রন বলে। ইলেকট্রিক্যাল কারেন্ট পরিবহনের জন্য এ ব্যান্ডে থাকা ইলেকট্রনের যতেষ্ঠ শক্তি থাকে না। শক্তি সঞ্চয় করে পরবর্তী উচ্চতর শক্তিস্তরে গিয়ে যোজন ইলেকট্রন গুলো ইলেকট্রিক্যাল কারেন্ট পরিবহনে ভূমিকা ফলে।  

কন্ডাকশন ব্যান্ড

ভ্যালেন্স ব্যান্ডের পরবর্তী উচ্চতর শক্তির ব্যান্ডের(১) নাম হচ্ছে কন্ডাকশন ব্যান্ড। এ শক্তি স্তরে থাকা ইলেকট্রন পদার্থের মধ্যে কোন একক পরমাণুর অধীনে না থেকে ক্রিস্টাল বা কেলাসের মধ্য দিয়ে অবাধে চলাচল করতে পারে। পদার্থের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রিক্যাল কারেন্ট পরিবহনের জন্য কন্ডাকশন ব্যান্ডে থাকা ইলেকট্রনসমূহ ভূমিকা রাখে। 

প্রাথমিকভাবে কন্ডাকশন ব্যান্ডে কোন ইলেকট্রন থাকে না। ভ্যালেন্স ব্যান্ড এর ইলেকট্রন শক্তি সঞ্চয় করে ( তাপ, চাপ, আলো বা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ প্রভৃতির মাধ্যমে ) উচ্চতর শক্তিস্তর যেমন কন্ডাকশন ব্যান্ডে যেতে পারে।

এনার্জি গ্যাপ

ব্যান্ড তত্ত্ব অনুযায়ী ভ্যালেন্স ইলেক্ট্রনের  শক্তি ( ভ্যালেন্স ব্যান্ড ) এবং যে শক্তিতে ইলেকট্রন পদার্থের মধ্য দিয়ে অবাধে চলাচল করতে পারে ( কন্ডাকশন ব্যান্ডে ) তার মধ্যে একটি ব্যবধান রয়েছে। অর্থাৎ ভ্যালেন্স ব্যান্ড এবং কন্ডাকশন ব্যান্ডের মধ্যে কোনো অনুমোদিত শক্তিস্তর থাকে না। ফলে এখানে কোনো ইলেকট্রন অবস্থান করতে পারে না। কোন ইলেকট্রন থাকে না বলে এই স্তরেকে এনার্জি গ্যাপ বা ফরবিডেন এনার্জি গ্যাপ বলে।

পরবর্তী পোস্টে কন্ডাক্টর, সেমিকন্ডাক্টর এবং ইনসুলেটর এর ব্যান্ড তত্ত্ব নিয়ে আরও বিশদ ব্যাখ্যা করা হবে। পরবর্তী পোস্ট পড়ার আমন্ত্রন জানিয়ে এই পোস্ট এখানেই শেষ করছি।

সম্পর্কিতি পরবর্তি পোস্ট

  1. কন্ডাক্টর, সেমিকোন্ডাক্টর এবং ইনসুলেটর এর ব্যান্ড তত্ত্ব - ( দ্বিতীয় পর্ব )
  2. ব্যান্ড তত্ত্ব  অনুযায়ী সেমিকন্ডাকটর 

(১) এছাড়া আরও উচ্চতর শক্তির ব্যান্ড রয়েছে যা আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু বহির্ভূত। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Attention Please

Purpose of this blog
Learning and Sharing is the main purposeof this site. If you find anything helpful, please, share this blog to your friends to help them.

Our FB group AMIE Help Center
Our Another Site Voltage Facts