সেমিকন্ডাক্টরে এনার্জি গ্যাপ কন্ডাকটর ও ইন্সুলেটরের মাঝামাঝি। কক্ষ তাপমাত্রায় সেমিকন্ডাক্টর সমূহ সামান্য পরিবাহিতা প্রদর্শন করে। তবে 0 কেলভিন তাপমাত্রায় এদের পরিবাহিতা থাকে না। কারন এ সময় কন্ডাকশন ব্যন্ডে কোন ইলেকট্রন থাকে না।
তাপমাত্রা বাড়িয়ে অথবা অন্য কোন উপায়ে ভ্যালেন্স ব্যান্ডের ইলেকট্রনের শক্তি বৃদ্ধি করে কন্ডাকশন ব্যান্ডে ইলেকট্রনের সংখ্যা বাড়ানো যায়। ডোপিং বা ভেজাল মিশ্রণ এর মাধ্যমে এদের পরিবাহিতা যথেষ্ট উন্নতি করা যায়।
আজকের পোস্টে যা যা থাকছে
- ডোপিং কি(What is Doping in Semiconductor)?
- ডোপিং কেন করা হয়?
- ডোপিং এর ভিত্তিতে সেমিকন্ডাক্টর
- ইনট্রিনসিক বা খাঁটি সেমিকন্ডাক্টর
- এক্সট্রিনসিক বা ভেজাল মিশ্রিত সেমিকন্ডাক্টর
- পি-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর কি?
- এন-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর কি?
আগের দুটি পোস্টে ইলেকট্রিক্যাল পরিবাহিতার কারুন হিসেবে পদার্থের ব্যান্ড গ্যাপ নিয়ে লিখেছি। আগের পোস্ট দুটির লিংক নিচে দেয়া হলো।
ডোপিং কি
বিশুদ্ধ সেমিকন্ডাকটর ইলেক্ট্রিক্যাল বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করার জন্য এর সাথে অল্প পরিমানে অন্য পদার্থ যুক্ত করা হয়। বিশুদ্ধ সেমিকন্ডাক্টর এর সাথে ভেজাল মিশ্রণের প্রক্রিয়াকে বলা হয় ডোপিং।
১. ইনট্রিনসিক বা খাঁটি সেমিকন্ডাক্টর
২. এক্সট্রিনসিক বা ভেজাল মিশ্রিত সেমিকন্ডাক্টর
১. ইনট্রিনসিক সেমিকন্ডাকটর
সিলিকন বা জার্মেনিয়াম ক্রিস্টালের গঠন |
এক্সট্রিন্সিক সেমিকন্ডাকটর
ইলেকট্রনের ঘাটতি বা আধিক্যের উপর ভিত্তি করে দুই ধরণের এক্সট্রিন্সিক সেমিকন্ডাকটর পাওয়া যায়।
এন-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর
ইনট্রিনসিক সেমিকোন্ডাক্টর এর সাথে ডোপিং এর মাধ্যমে পঞ্চযোজি মৌল যোগ করে তৈরি করা হয় এন-টাইপ ( N-type ) সেমিকন্ডাক্টর। পঞ্চযোজি মৌল হিসেবে সাধারণত ফসফরাস বা আর্সেনিক ব্যবহার করা হয়। ফসফরাস বা আর্সেনিকের বহিঃস্থ পাঁচটি ইলেকট্রনের মধ্যে চারটি ইলেকট্রন সিলিকন বা জার্মেনিয়ামের সাথে সমযোজী বন্ধন গঠনে ব্যবহার হয় ও অষ্টক পূরণ করে এবং একটি ইলেকট্রনের মুক্ত অবস্থায় থেকে যায়।
এই মুক্ত ইলেকট্রন ক্রিষ্টাল বা কেলাসের মধ্য দিয়ে মুক্তভাবে চলাচল করতে পারে। চার্জ পরিবাহক হিসেবে ইলেকট্রনের$(e^-)$ আধিক্য ঘটে বলে এই জাতীয় পদার্থকে এন-টাইপ ( Negative Type সংক্ষেপে N-type) সেমিকন্ডাক্টর বলে।
চিত্রে এন-টাইপ সেমিকন্ডাক্টরে চার্জ পরিবাহক হিসেবে ইলেকট্রনের আধিক্য দেখানো হয়েছে। এখানে কালো বৃত্ত দ্বারা ইলেকট্রন এবং সাদা বৃত্ত দ্বারা হোল বোঝানো হয়েছে। |
পি-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর
সিলিকন বা জার্মিনিয়ামের সাথে ডোপিং এর মাধ্যমে ত্রিযোজি মৌল যোগ করে তৈরি করা হয় পি-টাইপ ( P-type ) সেমিকন্ডাক্টর। ত্রিযোজি মৌল হিসেবে সাধারণত বোরন বা গেলিয়াম ব্যবহার করা হয়। বোরন বা গেলিয়ামের সর্ববহিঃস্থ তিনটি ইলেকট্রন সিলিকন বা জার্মেনিয়ামের চারটি ইলেকট্রনের সাথে সমযোজী বন্ধন গঠনে ব্যবহার হয়। এক্ষেত্রে উভয় পদার্থের পরমাণুর বহিঃস্থ কক্ষপথে অষ্টক পূরণে একটি ইলেকট্রনের ঘাটতি থেকে যায়। সেমিকোন্ডাক্টরে ইলেকট্রনের এরূপ ঘাটতিকে হোল বলা হয়।
চার্জ পরিবাহক হিসেবে হোলের আধিক্য ঘটে বলে এই জাতীয় পদার্থকে পি-টাইপ ( Positive type সংক্ষেপে P-type ) সেমিকন্ডাক্টর বলে।
(১) উল্লেখ্য বিষুদ্ধ সেমিকন্ডাকটরের সাথে যদি ভেজাল মিশ্রণের ফলে উৎপন্ন ক্রিস্টালে হোল এবং মুক্ত ইলেকট্রন সংখ্যা সমান থাকে তাহলেও ওই বস্তুটিকে ইনট্রিন্সিক সেমিকোন্ডাক্টর বলে।
এখানে পি টাইপ এবং এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টর সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেয়া হয়েছে। পরবর্তী পোস্টে পি-এন জাংশন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেয়া হবে।
সর্বশেষ আপডেটঃ ২৬ জুলাই ২০২২
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন