প্রযুক্তিগত দক্ষতার ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে

ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন

ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স

সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের ধারণাকে আমূল পরিবর্তন করে দিয়েছে অনগ্রীড সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থা। নতুনদের জন্য আজকের পোস্টে থাকছে অনগ্রীড সোলার সিস্টেম স্থাপনে প্রয়োজনীয় কিছু হিসাব নিকাশ।

জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে সবুজ বিপ্লব গড়ে তুলতে হলে সৌবিদ্যুতের বিকল্প নাই। সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের একটি জনপ্রিয় সিস্টেম হচ্ছে অনগ্রীড সিস্টেম। আসেন তাহলে কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় আসা যাক।

অনগ্রীড সোলার সিস্টেম কি?

অনগ্রীড সোলার সিস্টেম এমন এক সৌরশক্তি উৎপাদন ব্যবস্থা যেখানে মূল গ্রিডের সাথে যুক্ত থেকে সৌরশক্তি সরবরাহ করা হয়। অর্থাৎ এতে সোলার সিস্টেম ও গ্রীড একসাথে কাজ করে। ব্যবহারের ফলে যদি সোলার সিস্টেম দ্বারা উৎপাদিত বিদ্যুতে ঘাটতি ঘটে তাহলে তা পূরণ হয় মূল গ্রীড হতে আর বিদ্যুৎ বেশি হলে তা চলে যায় মূল গ্রীডে।

অনগ্রীড সোলার সিস্টেম কিভাবে কাজ করে?

অনগ্রিড সোলার সিস্টেমে কোনো ব্যাটারী থাকে না। প্রথমে সোলার প্যানেল সৌরশক্তি শোষণ করে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করে। এরপর তা ইনভার্টারের সাহায্যে বাড়ি/অফিসের ইলেকট্রিক লাইনের সাথে যুক্ত করা হয়।

লোডে প্রথমে সোলার সিস্টেম হতে উৎপন্ন শক্তি সরবরাহ করা হয়। এতে কোন প্রকারের ঘাটতি ঘটলে তা পূরণ করা হয় গ্রিড লাইন হতে। আবার ব্যবহারের চেয়ে যদি সোলার সিস্টেমে উৎপন্ন শক্তি বেশি হয় তাহলে তা চলে যায় মূল গ্রিডে।

অনগ্রিড সোলার সিস্টেম কখন/কোথায় ব্যবহার করা হয়

কারেন্ট না থাকলে বা লোডশেডিং এর সময় অনগ্রিড সোলার সিস্টেম কোন শক্তি সরবরাহ করে না। অর্থাৎ বাড়ি/অফিসে যদি আগে থেকে বিদ্যুৎ/কারেন্ট থাকে তাহলেই অনগ্রিড সোলার সিস্টেম লাগানো যাবে।

সাধারণত মাসিক ইলেকট্রিক বিল সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে অনগ্রিড সোলার সিস্টেম স্থাপন করা হয়। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল বা যেখানে ইলেক্ট্রিসিটি নেই সেখানে অনগ্রিড সোলার সিস্টেম স্থাপন করা যায় না।

আবার যে সকল স্থানে বিদ্যুৎ ফ্রিকোয়েন্টলি যায়/আসে সেখানে অনগ্রিড সোলার সিস্টেম ব্যবহার করা সুবিধাজনক না। সেক্ষেত্রে অফ গ্রিড সোলার সিস্টেম বা সোলার আইপিএস অথবা হাইব্রিড সোলার সিস্টেম ব্যবহার করা অধিক সুবিধাজনক।

অনগ্রীড সোলার সিস্টেম স্থাপনে কি কি প্রয়োজন

অনগ্রীড সোলার পাওয়ার সিস্টেমের উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে।

  1. সৌর প্যানেল
  2. সোলার ইনভার্টার
  3. সোলার র‍্যাক
  4. নেট মিটার
  5. নিরীক্ষণ সিস্টেহয়

গ্রীড সোলার সিস্টেম স্থাপনে প্রয়োজনীয় হিসাব নিকাশ

যেহেতু কোন ব্যাটারি থাকে না তাই অনগ্রিড সোলার সিস্টেম শুধু দিনের বেলা শক্তি সরবরাহ করবে। এখন আমাদের দিনের বেলা কি পরিমাণ লোড একটিভ থাকবে তা বের করতে হবে। ধরে নিই আমাদের প্রতিমাসে প্রায় ৪৫০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিল আসে। এই হিসেবে প্রতিদিনের খরচ ১৫ ইউনিট আর শুধু মাত্র দিনের বেলা খরচ হবে প্রায় ৭ বার ৭.৫ ইউনিট। এখানে হিসাবের সুবিধার্থে ৮ ইউনিট রাউন্ড ফিগার ধরে নিচে হিসাব নিকাশ দেখানো হলো।

১। সাধারণত একটি ১ কিলোওয়াটের সোলার সিস্টেম গড়ে প্রায় ৪ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এই হিসাবে আমাদের ২ কিলোওয়াটের একটি সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে হবে।

২। অনগ্রিড সোলার সিস্টেমে দক্ষতা কম থাকায় ২৫-৩০% বেশি সোলার প্যানেল স্থাপন করতে হবে। এক্ষেত্রে ২৫০০ ওয়াটের সোলার প্যানেল স্থাপন করতে হবে।

৩। ২ কিলোওয়াটের একটি অনগ্রিড সোলার ইনভার্টার লাগবে। বাজারে সাধারণত ১, ১.৫, ২, ৩, ৫, ৮, ১০, ১৫... কিলোওয়াটের অনগ্রিড সোলার ইনভার্টার পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে হিসাবে যে সাইজের অনগ্রিড সোলার ইনভার্টার আসে তার কাছাকাছি অনগ্রিড সোলার ইনভার্টার নির্বাচন করতে হয়।

৪। সোলার প্যানেল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় র‍্যাক ও ফ্রেমের প্রয়োজন।

৫। বাংলাদেশে ৮ কিলোওয়াটের বেশি হলে নেট মিটারের জন্য আবেদন করা যায়। এক্ষেত্রে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতিয় গ্রিডে বিক্রয় করা যাবে।

৬। অনগ্রিড সোলার সিস্টেমের সাথে একটি মনিটরিং সিস্টেম সংযুক্ত থাকে। অনেক ক্ষেত্রে এটি আইওটি ভিত্তিক হয়ে থাকে।

অনগ্রিড সোলার সিস্টেমের খরচ

এক কিলোওয়াটের একটি অনগ্রিড সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে হলে মোটামুটি ভাবে ৮০ থেকে ১২০ হাজার টাকা খরচ হয়।  ১০ কিলোওয়াট এর অনগ্রিড সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে হলে ১০-১২ লাখ টাকা খরচ হয়।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Attention Please

Purpose of this blog
Learning and Sharing is the main purposeof this site. If you find anything helpful, please, share this blog to your friends to help them.

Our FB group AMIE Help Center
Our Another Site Voltage Facts