আজকের পোস্টে ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজির একেবারে মৌলিক কয়েকটি বিষয় ভোল্টেজ, কারেন্ট এবং রেজিস্ট্যান্স বা রোধ নিয়ে আলোচনা করবো।
ভোল্টেজ বা বিভব বলতে কী বোঝায়
যে চাপের প্রভাবে কোন তড়িৎ পরিবাহির মধ্য দিয়ে ইলেকট্রিক চার্জ বা ইলেকট্রন প্রবাহ ঘটে তাকে ভোল্টেজ বা তড়িৎচাপ বা তড়িৎ বিভব বলে। ইলেকট্রিক ভোল্টেজকে কাজ ও ইলেকট্রিক চার্জ বা তড়িৎ আধান দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা যায়।
অসীম দূরত্ব থেকে একটি একক ধনাত্মক আধান বা চার্জকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে নিয়ে আসতে যে পরিমাণ কাজ সম্পাদন হয়, তাকে ঐ বিন্দুর তড়িৎবিভব বা ভোল্টেজ বলে। একে সাধারণত V বা E দ্বারা প্রকাশ করা হয় এবং এর একক ভোল্ট(Volt) যাকে V দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
উপরের সংজ্ঞা হতে আমরা লিখতে পারি, $V = W/Q$
W = সম্পন্ন কাজের পরিমান (জুলে),
ভোল্টেজ এর মাত্রা, [V] বা [E] $=\[ML^2T\ ^{−3}I\ ^{−1}\]$
তড়িৎচাপ বা ভোল্টেজ পরিমাপের একক
তড়িৎ চাপ বা ভোল্টেজ পরিমাপের একক ভোল্ট(Volt) এবং একে V দ্বরা প্রকাশ করা হয়।
অসীম বা শূন্য বিভবের স্থান থেকে যদি 1C (কুলম্ব) ধনাত্মক চার্জকে তড়িৎ ক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে নিয়ে আসতে যদি 1J (জুল) কাজ সম্পন্ন হয় তাহলে ঐ বিন্দুর বিভবকে 1V (ভোল্ট) বলে।
কোন সেল বা ব্যাটারি ভোল্টেজের 1.5V বলতে কি বুঝায়?
কোন ব্যাটারির ভোল্টেজ ১.৫V বলতে বোঝায় ব্যাটারির ঋণাত্মক প্রান্ত হতে এক কুলম্ব ধনাত্মক চার্জ ব্যাটারির ধনাত্মক প্রান্তে নিয়ে আসতে ১.৫J কাজ সম্পন্ন হবে।
তড়িৎ প্রবাহ বা কারেন্ট বলতে কী বোঝায়
তড়িৎচাপ বা ভোল্টেজের প্রভাবে কোন তড়িৎ পরিবাহীর মধ্য দিয়ে ইলেকট্রনের প্রবাহকে তড়িৎ প্রবাহ বা সংক্ষেপে প্রবাহ বা কারেন্ট বলে।
কোন পরিবাহীতে ভোল্টেজ পার্থক্য প্রদান করলে উচ্চ ভোল্টেজ হতে নিম্ন ভোল্টেজের দিকে একক সময়ে যে পরিমাণ ইলেকট্রন প্রবাহ ঘটে তাকে তড়িৎ প্রবাহ বা ইলেকট্রিক কারেন্ট বলে। ইলেকট্রিক কারেন্ট বা প্রবাহকে ইংরেজি অক্ষর $I$ দ্বারা সূচিত করা হয়।
$I = Q/t$
তড়িৎ প্রবাহ বা কারেন্ট পরিমাপের একক অ্যাম্পিয়ার (Ampere) এবং একে A দ্বরা প্রকাশ করা হয়।
কোন পরিবাহির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট 1 এম্পিয়ার বলতে বোঝায়, পরিবাহীর দুই বিপরীত পৃষ্ঠের ভোল্টেজ পার্থক্য ১ ভোল্ট করা হলে এর মধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে প্রবাহিত চার্জের পরিমাণ এক কুলম্ব।
তড়িৎ প্রবাহের দিক
রেজিস্ট্যান্স বা রোধ বলতে কী বোঝায়
পরিবাহির যে বৈশিষ্ট্যের জন্য এর মধ্য দিয়ে কারেন্ট বা তড়িৎ প্রবাহ বাধা পায় তাকে রেজিস্ট্যান্স (Resistance) বা রোধ বলে। রোধকে ইংরেজি অক্ষর $R$ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। রোধ পরিমাপের একক ওহম(Ohm) যাকে গ্রিক অক্ষর Ω(ওমেগা) দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
রোধের নিয়ামক বা সূত্র
- রেজিস্ট্যান্স পরিবাহীর দৈর্ঘ্যের সমানুপাতিক অর্থাৎ দৈর্ঘ্য বাড়লে রেজিস্ট্যান্স বাড়ে $(R ∝ l)$।
- পরিবাহীর রোধ এর প্রস্থচ্ছেদের ব্যাস্তানুপাতিক অর্থাৎ প্রস্তুদের ক্ষেত্রফল বাড়লে রেজিস্ট্যান্স কমে $(R ∝ 1/A)$।
উপরের সূত্র দুইটি একত্র করলে পাই,
এখানে ρ একটি সমানুপাতিক ধ্রুবক। এটিকে পদার্থের উপাদানের রেজিস্টিভিটি বা রোধনাংক বা আপেক্ষিক রোধ বলে।
রেজিস্ট্যান্স বা রোধের মাত্রা, $\[R\]=\[ML^2A^{-2}T\ ^{-3}\]$
আপেক্ষিক রোধ কাকে বলে?
একক দৈর্ঘ্য ও একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট কোন পরিবাহকের দুই বিপরীত পৃষ্ঠে যে রেজিস্ট্যান্স বা রোধ পাওয়া যায় তাকে ঐ পরিবাহকে উপাদানের রেজিস্ট্রিভিটি বা আপেক্ষিক রোধ বলে।
উপরের সূত্র হতে আপেক্ষিক রোধ বা রেজিস্টিভিটির একক পাওয়া যায়, $ρ = R A/l =Ω-m$ বা ওহম-মিটার
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন