প্রযুক্তিগত দক্ষতার ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে

ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন

ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স

সার্কিট ব্রেকারের চলমান ও স্থির পাত দুটি ভ্যাকুয়াম বা বায়ুশূন্য অবস্থায় থাকে। বায়ুশূন্য অবস্থায় আর্ক নিভানো যায় সবচেয়ে কম জায়গায়। ছোট আকৃতির ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার তাই খুব জনপ্রিয়।

ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার (Vacuum Circuit Breaker - VCB বা ভিসিবি) হলো এমন এক ধরণের সার্কিট ব্রেকার যাতে উৎপন্ন আর্ক ভ্যাকুয়াম (বা শূন্য) মাধ্যমে নির্বাপিত ও প্রশমিত করা হয়। প্রযুক্তিটি মূলত মাঝারি ভোল্টেজে প্রয়োগের জন্য উপযোগী। উচ্চতর ভোল্টেজের জন্য ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার থাকলেও তা বাণিজ্যিকভাবে  তেমন ব্যবহার করা হয় না ।


কারেন্ট বহনকারী পাত সংযুক্ত ও বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং আর্ক নিভানোর প্রক্রিয়া সার্কিট ব্রেকারের একটি ভ্যাকুয়াম চেম্বারের মধ্যে সংঘটিত হয় যা ভ্যাকুয়াম ইন্টারাপ্টার নামে পরিচিত। ভ্যাকুয়াম ইন্টারাপ্টারটি ভেতরের দিকে সিরামিক দিয়ে ঢাকা একটি ইস্পাত চেম্বার নিয়ে গঠিত। একটি ভ্যাকুয়াম ইন্টারাপটারের ভিতরে ভ্যাকুয়াম চাপ সাধারণত 10-6 bar বজায় থাকে।

কারেন্ট বহনকারী ধাতব পাতের উপাদান ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকারের কার্যকারিতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিসিবি-তে কারেন্ট পরিবাহী পাত হিসেবে সাধারণত কপার(Cu) অথবা ক্রোমিয়াম(Cr) ব্যবহৃত হয়। ভ্যাকুয়াম ইন্টারাপটারের প্রযুক্তি সর্বপ্রথম ১৯৬০ সালে ব্যবহার হলেও এখনো এটি একটি আধুনিক প্রযুক্তি। তবে সময়ের পরিক্রমণের সাথে আরও কিছু আধুনিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তি যুক্ত হওয়ায় এর আকৃতি অনেকটাই কমে এসেছে।

সময়ের সাথে সাথে ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকারে ব্যবহৃত কারেন্ট পরিবাহী পাতের জ্যামিতিক আকৃতিও উন্নত হয়েছে, প্রথমদিকে বাট আকৃতির সংযোগ পদ্ধতি ব্যবহার হলেও বর্তমানে সর্পিল আকার, কাপের আকার সংযোগ ব্যবহার হচ্ছে। ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার বর্তমানে মাঝারি ভোল্টেজের ( 11 কেভি থেকে 33 কেভি পর্যন্ত ) সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সুইচগিয়ারে প্রযুক্তি হিসাবে স্বীকৃত। কারন অন্যান্য সার্কিট ব্রেকার প্রযুক্তির তুলনায় এটির রক্ষণাবেক্ষণ অনেক কম প্রয়োজন।

ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার বা ভিসিবি-র সুবিধা

ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকারের ব্যবহারিক স্থায়ীকাল অন্যান্য ধরণের সার্কিট ব্রেকারের তুলনায় অনেক বেশি। এক্ষেত্রে অয়েল সার্কিট ব্রেকারের মতো আগুন ধরার কোনও সম্ভাবনা নেই। ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার SF6 সার্কিট ব্রেকারের চেয়ে পরিবেশ বান্ধব। এসকল সুবিধার পাশাপাশি ভিসিবি ব্যবহার করা সহজ। ভ্যাকুয়াম ইন্টারাপ্রটার প্রতিস্থাপন করাও অনেক সহজ। নিচে ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার ব্যবহারের সুবিধা গুলো উল্লেখ করা হলো

  • এগুলি কমপ্যাক্ট, নির্ভরযোগ্য এবং দীর্ঘদিন  ব্যবহার করা যায়।
  • আগুনের কোনও ঝুঁকি নেই।
  • অপারেশন চলাকালীন এবং পরে  কোন ক্ষতিকারক গ্যাস বের হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
  • যে কোনও ত্রুটিতে কারেন্ট প্রবাহে বাধা দিতে পারে।
  • খুব কম রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন এবং ক্রিয়াকলাপ নিঃশব্দে ঘটে।
  • বজ্রপাত সহ্য করতে পারে।
  • উৎপন্ন আর্ক অপেক্ষাকৃত কম শক্তির।
  • জড়তা কম, তাই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জন্য অপেক্ষাকৃত কম শক্তি প্রয়োজন।

ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকারের নীতি

কোন ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকারে আর্ক উৎপাদন ও তার নির্বাপণ নিম্নরূপে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে:


কোন ত্রুটি শনাক্ত হলে ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকারের কারেন্ট বহনকারী পাত একটি হতে অন্যটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার সময়, সংযোগকারী পাতের কিছু অংশ বাষ্পে পরিণত হয়। ধাতব বাষ্পের আয়নাইজেশনের ফলে আর্ক উৎপন্ন হয়। তবে, আর্কের সময় উত্পাদিত ধাতবীয় বাষ্প, ইলেক্ট্রন এবং আয়ন সার্কিট ব্রেকারের সংযোগকারী পাতের পৃষ্ঠে দ্রুত ঘনীভূত হয়, ফলে ডাইলেট্রিক স্ট্রেঙ্থ দ্রুত পুনরুদ্ধার হয়  আর আর্ক উৎপন্ন হওয়ার সাথে সাথে নির্বাপিত হয়।

ভ্যাকুয়ামে (প্রেসার 10-7 থেকে 10-5 Torr) মাধ্যমে স্থির পাত হতে চলমান পাতের দূরত্ব কমপক্ষে ১মিমি হলে তা ৩kv পর্যন্ত আর্ক নির্বাপনে সক্ষম। অর্থাৎ দূরত্ব ১ সেন্টিমিটার হলে এটি ১৫ কিলোভোল্ট পর্যন্ত আর্ক নির্বাপণ করতে পারে।

একটি সিল করা ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার ইচ্ছে করলেই খুলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা যায় না। তবে ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকারের আয়ুষ্কাল অনেক বেশি; সাধারণত 20 বছর পর্যন্ত নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে।



1 টি মন্তব্য:

Attention Please

Purpose of this blog
Learning and Sharing is the main purposeof this site. If you find anything helpful, please, share this blog to your friends to help them.

Our FB group AMIE Help Center
Our Another Site Voltage Facts