আধুকিন যুগকে সেমিকন্ডাক্টরের ব্যপক ব্যবহারের দিকে ঠেলে দেয়ার একটি আবিষ্কার হচ্ছে পি-এন জাংশন তত্ত্ব (P-N junction theory)। এর মাধ্যমে অসংখ্য পি-এন জাংশন ডিভাইস তৈরির দ্বার উন্মোচন হয় এবং ইলেকট্রনিক্সের আধুনিক যুগের সূচনা ঘটে।
যা থাকছে আজকের লেখায়
- P-N জাংশন কি?
- P-N জাংশন গঠন পক্রিয়া
- ডেপ্লেশন রিজিওন
- মাইনোরিটি এবং মেজোরিটি চার্জ ক্যারিয়ার
- বেরিয়ার ভোল্টেজ বলতে কি বোঝায়
পিএন জাংশন কাকে বলে
বিশেষ উপায়ে একটি পি-টাইপ ও একটি এন-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর যুক্ত করলে এর সংযুক্ত স্থানকে বলা হয় p-n জাংশন।
পিএন জাংশন গঠন প্রক্রিয়া
একটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় পাতলা সেমিকন্ডাক্টর ক্রিস্টাল এর একপাশে ত্রিযোজী মৌল ডোপিং করা হয় এবং অন্যপাশে পঞ্চ যোজীমৌল ডোপিং করা হয়। ফলে তৈরি হয় পি-টাইপ এবং এন-টাইপ সেমিকন্ডাকটর এবং এদের সংযোগস্থলে তৈরি হয় পিএন জাংশন।
চার্জ ক্যারিয়ার
পদার্থের মধ্যে থাকা মুক্ত ইলেকট্রন, আয়ন বা হোল যা ইলেকট্রিক্যাল চার্জ পরিবহন করতে পারে তাই চার্জ ক্যারিয়ার। কন্ডাকশন ব্যান্ডে থাকা চার্জ ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করে। p-টাইপ ও n-টাইপ সেমিকন্ডাকটর যথাক্রমে হোল এবং ইলেকট্রন উভয়ই কন্ডাকশন ব্যান্ডে থাকে। ফলে এতে সামান্য ভোল্টেজ প্রয়োগ করলেই কারেন্ট প্রবাহিত হয়।
মেজরিটি ও মাইনোরিটি চার্জ ক্যারিয়ার
N-টাইপ সেমিকন্ডাকটরে পঞ্চযোজি মৌল এবং ইনট্রিনসিক সেমিকন্ডাকটর (যেমন Si, Ge)-এর মধ্যে সমযোজি বন্ধন গঠনের মাধ্যমে অষ্টক পূরণের পর একটি ইলেকট্রন মুক্ত অবস্থায় থাকে। আবার কক্ষ তাপমাত্রায় কিছু ইলেকট্রন ব্যালেন্স ব্যান্ড থেকে কন্ডাকশন ব্যান্ডে চলে আসায় ইলেকট্রনের সংখ্যা বাড়ে এবং কিছু হোলের সৃষ্টি হয়।
উপরে উল্লেখিত কারণে পি-টাইপ সেমিকন্ডাকটরে ইলেকট্রনের আধিক্য এবং কিছু সংখ্যক হোল থাকে। তাই পি টাইপ সেমিকন্ডাক্টরে মেজরিটি চার্জ ক্যারিয়ার হিসেবে থাকে ইলেকট্রন এবং মাইনোরিটি চার্জ ক্যারিয়ার হিসেবে থাকে হোল।
অনুরূপভাবে পি-টাইপ অংশে মেজিরিটি চার্জ ক্যারিয়ার হচ্ছে হোল এবং মাইনোরিটি চার্জ ক্যারিয়ার হিসেব থাকে ইলেকট্রন।
ডিপ্লেশন রিজিয়ন (Deplation Region)
পি-এন জাংশন তৈরির সময় জংশনের নিকটে n-টাইপ সেমিকন্ডাকটর হতে কিছু ইলেকট্রন p-টাইপ অংশে এবং p-টাইপ সেমিকন্ডাকটর হতে কিছু হোল n-টাইপ অংশে প্রবেশ করে। ফলে p-টাইপ অংশে একটি নেগেটিভ আয়ন এবং n-টাইপ অংশে একটি পজিটিভ আয়নের অঞ্চল তৈরি হয়। এই আয়নিক অঞ্চলকে একত্রে বলা হয় ডিপ্লেশন রিজিওন (Deplation Region)।
$+Ve$ এবং $-Ve$ আয়নের প্রভাবে এই অঞ্চলে কোন মুক্ত ইলেকট্রন বা হোল থাকে না। ফলে N-টাইপ সেমিকন্ডকটর হতে কোন ইলেকট্রন বা P-টাইপ সেমিকন্ডাকটর হতে কোন হোল উল্লেখিত আয়নিক অঞ্চল অতিক্রম করতে হলে একটি বাধার সম্মুখীন হয়। আয়নিক অঞ্চল দ্বারা সৃষ্ট জাংশনের দুই বিপরিত পৃষ্ঠে যে স্থির ভোল্টেজ পর্থক্যের সৃষ্টি হয় তা-ই হচ্ছে এই বাধার পরিমাপ।
আয়নিক অঞ্চলের প্রভাবে পি-এন জংশনের দুই বিপরীত পৃষ্ঠে যে ভোল্টেজ পার্থক্যের সৃষ্টি হয় তাকে ব্যারিয়ার ভোল্টেজ বলে। সিলিকনের ক্ষেত্রে এই ব্যারিয়ার ভোল্টেজ এর মান প্রায় 0.7V এবং জার্মেনিয়ামের ক্ষেত্রে 0.3V.
পরবর্তী লেখা পি-এন জাংশন ডায়োড পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে এই পোস্টটি এখানেই শেষ করছি। আশা করি, লিখাটি অনেকের, বিশেষ করে নতুনদের উপকারে আসবে। লেখাটি ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন