PN জাংশন তত্ত্ব দিয়ে তৈরি প্রথম PN জাংশন সেমিকন্ডাকটর ডিভাইস হচ্ছে PN জাংশন ডায়োড। সাধারণ রেকটিফায়ার ডায়েট থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিশেষ মূলত একই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে তৈরি।
- পিএন জাংশন ডায়োড গঠন প্রক্রিয়া
- সার্কিট সিম্বল বা প্রতীক
- বায়াস পদ্ধতি
- শুন্য (০) বায়াস
- ফরোয়ার্ড বায়াস
- রিভার্স বায়াস
- রিভার্স ব্রেকডাউন ভোল্টেজ
- V-I বৈশিষ্ট্য রেখা
- ফরোয়ার্ড বায়াস (V-I বৈশিষ্ট্য রেখা)
- রিভার্স বায়াস (V-I বৈশিষ্ট্য রেখা)
- বিভিন্ন প্রকার ডায়েডের নাম
- রেকটিফায়ার ডায়োড
- জেনার ডায়োড
- লাইট ইমিটিং ডায়োড
- ফটো ডায়োড
- ভ্যারেক্টার ডায়োড
- ইনফ্রারেড লাইট ইমিটিং ডায়োড
- লেজার ডায়োড
- শটকি ডায়োড
- টানেল ডায়োড
পিএন জাংশন ডায়োড গঠন প্রক্রিয়া
পাতলা সিলিকন বা জার্মিনিয়াম ক্রিস্টলের একপ্রান্তে N-টাইপ সেমিকন্ডাকটর এবং অন্য পাশে P-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করা হলে এদের সংযোগস্থলে একটি আয়নিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পি–এন জাংশন বা সংযোগ সৃষ্টি হয়। আলাদাভাবে একটি পি-টাইপ ও একটি এন-টাইপ সেমিকন্ডাকটর যুক্ত করলে PN জাংশন তৈরি হয় না।
পিএন জাংশন গঠনের পর অবশিষ্ট দুই প্রান্তের সাথে দুটি ধাতব তার/লিড যুক্ত করে তৈরি হয় পি-এন জাংশন ডায়োড। N-টাইপের সাথে যুক্ত লিডকে বলা হয় ক্যাথোড লিড বা সংক্ষেপে ক্যাথোড এবং P-টাইপের সাথে যুক্ত লিডকে বলা হয় অ্যানোড লিড বা সংক্ষেপে অ্যানোড।
PN জাংশন ডায়োডের প্রতীক
ডায়োড বায়াসিং পদ্ধতি
ডায়োড ব্যবহার করলে দুই ধরণের বায়াসিং পরিলক্ষিত হয়। ফরোয়ার্ড বায়াস ও রিভার্স বায়াস, এক্ষেত্রে একটি বহিঃস্থ ভোল্টেজ সোর্স হতে পাওয়া সরবরাহ করা হয়। এছাড়া শুন্য(০) বায়াস সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
শুন্য বায়াস
অ্যানোড ও ক্যাথোড যখন শর্ট সার্কিট করা হয় তখন ডায়োড শূন্য বায়াস অবস্থায় থাকে। এ অবস্থায় ডিফিউশন কারেন্ট প্রবাহিত হয় অর্থাৎ উচ্চ ঘনত্বের মেজরিটি চার্জ ক্যারিয়ার অংশ হতে কম ঘনত্বের স্থানে প্রবাহিত হয়। এভাবে সাম্যাবস্থায় না আসা পর্যন্ত ডিফিউশন কারেন্ট প্রবাহিত হয়। তবে এর ফলে মোট কারেন্ট ঘনত্ব, $J= 0$ থাকে। [এ ধরনের কারেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে চার্জ ক্যারিয়ারের ফার্মি লেভেল সম্পর্কে জ্ঞান থাকা জরুরী, যা আমাদের আলোচনার বহিরভূত হওয়ায় আপাতত এ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করছি না]
ফরওয়ার্ড বায়াস
ডায়োডের P প্রান্তের সাথে ব্যাটারি বা বহিঃস্থ ভোল্টেজ সোর্সের ধনাত্মক প্রান্ত এবং ডায়োডের N প্রান্তের সাথে ব্যাটারি বা বহিঃস্থ ভোল্টেজ সোর্সের ঋণাত্মক প্রান্ত যুক্ত করে যে বায়াসিং করা হয় তাকে ফরোয়ার্ড বায়াস বলে।
ফরওয়ার্ড বায়াস প্রয়োগ করলে ভোল্টেজ উৎসের ঋণাত্মক প্রান্ত হতে আগত ইলেকট্রন N টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের মুক্ত ইলেকট্রন গুলোকে বিকর্ষণ করে জংশনের দিকে ধাবিত করবে। অনুরূপভাবে ভোল্টেজ উৎসের ধনাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত থাকায় পি টাইপ সেমিকন্ডাকটরের হোলগুলো জংশনের দিকে ধাবিত হবে। এভাবে বিকর্ষণের ফলে জংশনের বস্তুগত আকার ছোট হয়ে যাবে ও মেজরিটি চার্জ ক্যারিয়ারগুলো জংশন অতিক্রম করার চেষ্টা করবে। বিকর্ষণের মাত্রা যদি বেশি হয় তাহলে চার্জ ক্যারিয়ারগুলো পোটেনশিয়াল ব্যারিয়ার অতিক্রম করে কারেন্ট প্রবাহ ঘটাবে।
এ অবস্থায় ডায়োডের বৈশিষ্ট্য বোঝার জন্য যদি ভোল্টেজ শূন্য(0) থেকে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করা হয় তাহলে প্রথমে কোন কারেন্ট প্রবাহিত হবে না। প্রয়োকৃত ভোল্টেজ ব্যারিয়ার ভোল্টেজ অতিক্রম করার সাথে সাথে কারেন্ট হঠাৎ বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ প্রয়োগকৃত ভোল্টেজ ব্যারিয়ার ভোল্টেজ এর চেয়ে কম হলে পি এন জাংশন ডায়োডটি একটি খোলা সুইচের ন্যায় আচরণ করবে এবং বেশি হলে একটি বন্ধ সুইচ এর মত আচরণ করবে। ডায়োডের এ আচরণ নিচের ভোল্টেজ-কারেন্ট বৈশিষ্ট্য রেখায় দেখানো হয়েছে।
রিভার্স বায়াস
ডায়োডের N প্রান্তের সাথে ব্যাটারি বা বহিঃস্থ ভোল্টেজ সোর্সের ধনাত্মক প্রান্ত এবং ডায়োডের P প্রান্তের সাথে ব্যাটারি বা বহিঃস্থ ভোল্টেজ সোর্সের ঋণাত্মক প্রান্ত যুক্ত করে যে বায়াসিং করা হয় তাকে রিভার্স বায়াস বলে।
রিভার্স বায়াস প্রয়োগ করলে ভোল্টেজ উৎসের ধনাত্মক প্রান্তের ইলেকট্রন P টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের হোলগুলোকে আকর্ষণ করে। অনুরূপভাবে ভোল্টেজ উৎসের ঋণাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত থাকায় N টাইপ সেমিকন্ডাকটরের মুক্ত ইলেকট্রন গুলো জংশনের হতে দূরে সরে যায়। এভাবে আকর্ষণের ফলে জাংশনের আকার বড়ে যায় ও জাংশনের কাছাকাছি কোন মেজরিটি চার্জ ক্যারিয়ার থাকে না। ভোল্টেজ বেশি হলে আকর্ষণের মাত্রা বেশি হয়। রিভার্স বায়াসের সময় PN জাংশন ডায়োড একটি খোলা সুইচের মত আচরণ করে।
এ অবস্থায় ডায়োডের বৈশিষ্ট্য বোঝার জন্য যদি ভোল্টেজ শূন্য(0) থেকে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করা হয় তাহলে প্রথমে কোন কারেন্ট প্রবাহিত হবে না। প্রয়োকৃত ভোল্টেজ একটি নির্দিষ্ট ভোল্টেজের বেশি হলে কারেন্ট হঠাৎ বৃদ্ধি পাবে এবং জাংশন ভেঙ্গে যাবে। অর্থাৎ ডায়োডটি স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যাবে। ডায়োডের এ আচরণ নিচের ভোল্টেজ-কারেন্ট বৈশিষ্ট্য রেখায় দেখানো হয়েছে।
রিভার্স ব্রেকডাউন ও রিভার্স ব্রেকডাউন ভোল্টেজ
পিএন জাংশন ডায়োডে রিভার্স বায়াস দিলে এতে কোনো কারেন্ট চলে না তবে ধীরে ধীরে রিভার্স ভোল্টেজ বাড়তে থাকলে এক সময় ডায়োড দিয়ে মাত্রাতিরক্ত কারেন্ট প্রবাহিত হয় এবং এর জাংশন ভেঙে যায় অর্থাৎ ডায়োডটি সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যায়। রিভার্স বায়াসে P-N জংশন ডায়োডের এরূপ ভেঙে যাওয়ার রিভার্স ব্রেকডাউন বলে এবং যে ভোল্টেজে রিভার্স ব্রেক ডাউন ঘটে তাকে রিভার্স ব্রেকডাউন ভোল্টেজ বলে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন