প্রযুক্তিগত দক্ষতার ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে

ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন

ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স

ধরি, অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার ব্যবহার করে আপনি একটি এমপ্লিফায়ার সিস্টেম ডিজাইন করেছেন। এখন ডিজাইন অনুযায়ী বাস্তবায়ন করে দেখলেন সার্কিটটি আশানুরূপ কাজ করছে না। তবে আপনি যদি নিম্নোক্ত কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রেখে আপনার সার্কিটটি ডিজাইন করে থাকেন তাহলে আশানুরূপ ফলাফল অবশ্যই পেয়ে থাকবেন।
  •  পাওয়ার সাপ্লাই হতে আগত নয়েজ
  •  আই.সি.-র ইন্টারনাল নয়েজ
  •  পাশের আই সি বা কম্পোনেন্ট হতে আগত নয়েজ
  •  পরিবেশ হতে আগত নয়েজ
  • এসি এবং ডিসি সিগন্যালের সহ অবস্থানের ফলে সৃষ্ট নয়েজ
  • লোডিং ইফেক্ট

সিগন্ন সিগন্যাল প্রক্রিয়াকরণের জন্য বিভিন্ন ইলেকট্রিক সার্কিটে ক্যাপাসিটরের বিশেষ ব্যবহার হচ্ছে কাপলিং/ডিকাপলিং বা বাইপাস ক্যাপাসিটর হিসেবে। সার্কিটে নয়েজের পরিমাণ হ্রাস করা, সিগন্যালের এসি এবং ডিসি লেভেলকে পৃথক রাখা, সার্কিটকে প্রভাবিত না করে ইনপুট ও আউটপুট প্রদান করা ইত্যাদি কাজে ক্যাপাসিটরের এরূপ ব্যবহার হয়ে থাকে। আজকের আর্টিকেলে উল্লেখ্য ক্যাপাসিটরের এই বিশেষ ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হবে।

সাধারণ স্বীকার্য

আমরা জানি, ক্যাপাসিটর এক ধরনের স্থির ইলেকট্রিক্যাল ডিভাইস যা স্থির বৈদ্যুতিক শক্তি সঞ্চয় করে রাখে এবং প্রয়োজনে এ শক্তি সরবরাহ করতে পারে। এই ধরনের বৈশিষ্ট থাকায় ক্যাপাসিটর এসি সিগন্যালকে যেতে দেয় এবং ডিসি সিগন্যালকে বাধা প্রদান করে।যদি আরো নির্দিষ্ট করে বলি  তাহলে ক্যাপাসিটর তুলনামূলক বেশি ফ্রিকোয়েন্সির সিগন্যালকে সহজে যেতে দেয় কিন্তু কমপ্লিট সিগন্যালকে যথেষ্ট বাধা প্রদান করে। তবে সিগনাল প্রেরণ বা যোগাযোগ করার সময় নির্দিষ্ট পরিমাণ ইম্পিডেন্স এর যোগান দেয় ক্যাপাসিটর যা ক্যাপাসিট্যান্স এবং ফ্রিকোয়েন্সির উপর নির্ভর করে।

ক্যাপাসিটর এর এই বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বাইপাস, কাপলিং বা ডি-কাপলিং ক্যাপাসিটরের কার্যপ্রণালী প্রতিষ্ঠিত।

বাইপাস ক্যাপাসিটর

হাই ফ্রিকোয়েন্সি এসি নয়েজকে বাইপাস করে গ্রাউন্ড করার মাধ্যমে যে ক্যাপাসিটর সার্কিটকে নয়েজ মুক্ত রাখে তাকে বাইপাস ক্যাপাসিটর বলে। বাইপাস ক্যাপাসিটর মূলত ডিসি সিগন্যাল হতে হাই ফ্রেকন্সি এসি সিগন্যালকে গ্রাউন্ড করে; ফলে নয়েজ মুক্ত (সামান্য রিপল সিগনাল ব্যতীত) একটি ডিসি সিগন্যাল পাওয়া যায়।আগত স্পাইক ভোল্টেজ এবং বিভিন্ন প্রকার নয়েজকে বাইপাস করায় এর এরূপ নামকরন।

কোন অনাকাংখিত সিগন্যাল বা নয়েজকে পাওয়ার লাইন হতে গ্রাউন্ড করার জন্য ব্যবহার করা হয় বাইপাস ক্যাপাসিটর। ফলে সার্কিটে একটি বিশুদ্ধ ডিসি ভোল্টেজ পাওয়া যায়। যেমন নিচে চিত্রে C2 ক্যাপাসিটর হাই-ফ্রিকুয়েন্সি ক্যারিয়ার সিগন্যালকে গ্রাউন্ডে বাইপাস করে কিন্তু অডিও সিগন্যাল অক্ষত থাকে।


আইসি-র অভ্যন্তরে দ্রুতগতির সুইচিং এর ফলে নয়েজ উৎপন্ন হয় যা সার্কিটের কার্য প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে। তাই উৎপন্ন নয়েজকে দূর করার জন্য যথাসম্ভব আইসির কাছাকাছি পাওয়ার পিন এবং গ্রাউন্ড পিনের মাঝে একটি বাইপাস ক্যাপাসিটর ব্যবহার করা হয়।

অনেক সময় বাইপাস ক্যাপাসিটর এবং কাপলিং বা ডি-কাপলিং ক্যাপাসিটর এর মধ্যে তেমন পার্থক্য থাকেনা। একটিমাত্র আইসি-ই তিনটি কাজ করতে পারে যা আশা করছি আমাদের পরবর্তী আলোচনায় পরিষ্কার হবে।

কাপলিং এবং ডি-কাপলিং ক্যাপাসিটর

সাধারণত সার্কিটের ইনপুট এবং আউটপুট প্রান্তে অথবা সার্কিটের বিভিন্ন স্টেজে এসি সিগন্যাল আদান-প্রদান করার জন্য ক্যাপাসিটরের এরূপ ব্যবহার হয়ে থাকে। বিভিন্ন সার্কিটে ক্যাপাসিটর এরূপ ফিল্টার হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। নিচে একটি উদাহরন উপস্থাপন করা হলো।


চিত্রে প্রদর্শিশত C1 এবং C2 হচ্ছে কাপলিং এবং ডি-কাপলিং ক্যাপাসিটর। আমি এখানে কাপলিং এবং ডি-কাপলিং কথা দুটি একসাথে ব্যবহার করেছি। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একই ক্যাপাসিটর এই দুটি কাজ একসাথেই করে থাকে। কাপলিং এবং ডি-কাপলিং ক্যাপাসিটর এর কার্যপ্রণালী সহজে ব্যাখ্যার জন্য উপরের সার্কিটটি উপস্থাপন করা হয়েছে।

এক্ষেত্রে C1 ক্যাপাসিটর ট্রান্সডিউসারে উৎপন্ন এসি সিগন্যালকে ট্রানজিস্টর অ্যামপ্লিফায়রের সাথে কাপল করে তবে ইলেকট্রেট মাইক্রোফোন বা বায়াসিং এর ফলে ইনপুট সিগনালে যে ডিসি অংশ থাকে তা হতে অ্যামপ্লিফায়ার অংশকে পৃথক রাখে অর্থাৎ ডি-কাপল করে। ফলে সার্কিটের উভয় অংশ একটিকে অন্যটি প্রভাবিত না করে সঠিকভাবে কাজ করতে পারে। অনুরূপভাবে C2 কাপলিং ও ডি-কাপলিং ক্যাপাসিটর অ্যামপ্লিফায়ারের আউটপুটে লোড সংযুক্ত করে। এক্ষেত্রে এমপ্লিফায়ারের ডিসি সিগন্যালকে এটি বাধা প্রদান করে এবং এসি সিগন্যালকে লোডে সরবরাহ করে। এভাবে ব্যবহৃত কাপলিং এবং ডি-কাপলিং ক্যাপাসিটর প্রয়োজনীয় ইম্পিড্যান্স ম্যাচিং এর কাজও করে থাকে। এই ক্যাপাসিটরটি ব্যবহার করা না হলে লোডের মধ্য দিয়ে সার্বক্ষণিক একটি ডিসি কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে। ফলে পাওয়ার অপচয় বাড়বে, দক্ষতা কমবে, ব্যবহৃত ইন্সট্রুমেন্টে অতিরিক্ত তাপ উৎপন্ন হবে ও এর আয়ুস্কাল কমে যাবে।

কাপলিং এবং ডি-কাপলিং ক্যাপাসিটর নির্বাচন

কাপলিং/ডি-কাপলিং ও বাইপাস ক্যাপাসিটর নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে সার্কিট ব্যবহৃত ফ্রিকুয়েন্সি। কোন ফ্রিকোয়েন্সির সিগন্যাল বাইপাস হবে, কোন ফ্রিকোয়েন্সি কাপল করা হবে অথবা কোন ফ্রিকোয়েন্সি ডি-কাপল করা হবে তার ভিত্তি করে ক্যাপাসিটরের নির্বাচন করতে হয়। বাইপাস ক্যাপাসিটর সবসময়ই উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি বা স্পাইক ওয়েভের  জন্য একটি শর্ট সার্কিট তৈরি করে। ফলে ফ্রিকোয়েন্সি অনুযায়ী এর মান এমন হবে যাতে ক্যাপাসিটিভ রিয়্যাকট্যান্স এর মান সর্বনিম্ন হয়। কাপলিং বা ডি-কাপলিং  ক্যাপাসিটর এর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। আকাঙ্খিত ফ্রিকুয়েন্সির সিগন্যালের জন্য নিম্ন রিয়্যাকট্যান্স এবং অনাকাঙ্ক্ষিত সিগন্যালের জন্য উচ্চ রিয়্যাকট্যান্সের রাস্তা তৈরি করা এই ক্যাপাসিটর এর কাজ।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Attention Please

Purpose of this blog
Learning and Sharing is the main purposeof this site. If you find anything helpful, please, share this blog to your friends to help them.

Our FB group AMIE Help Center
Our Another Site Voltage Facts