প্রযুক্তিগত দক্ষতার ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে

ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন

ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স

অ্যামপ্লিফায়ার কি (What is amplifier)?

অ্যামপ্লিফায়ার (সংক্ষেপে যাকে Amp-অ্যাম বলে) এমন এক ইলেকট্রনিক ডিভাইস/সার্কিট যা কোন ইলেকট্রনিক সিগন্যালের ওয়েভশেপ ও ফ্রিকুয়েন্সি অপরিবর্তিত রেখে এর শক্তি (ভোল্টেজ বা কারেন্ট অথবা উভয়ই) বৃদ্ধি করে। অ্যামপ্লিফায়ার এর প্রধান কাজ হচ্ছে বহিস্থ কোন উৎস হতে শক্তি সংগ্রহ করে দুর্বল সিগন্যালের কারেন্ট, ভোল্টেজ বা পাওয়ার শক্তিশালী করা। বহিস্থ শক্তির যোগান দিতে সাধারণত বিশুদ্ধ ডিসি সরবরাহ করা হয়। চিত্রে সময়ের সাথে পরিবর্তনশীল একটি সিগনালের ভোল্টেজ অ্যামপ্লিফাই দেখানো হয়েছে। এখানে নীল সিগন্যালটি অ্যামপ্লিফাই করার পূর্বে এবং লাল সিগন্যালটি অ্যামপ্লিফাই করার পর পাওয়া যায়।

অ্যামপ্লিফায়ার সাধারণত দুই পোর্ট বা চার টার্মিনাল বিশিষ্ট হয়ে থাকে। এটি আধুনিক ইলেকট্রনিক্সে বহুল ব্যবহৃত একটি সার্কিট মডিউল যা প্রায় সকল বহারিক ইলেকট্রনিক ডিভাইসের অভ্যন্তরে ব্যবহার হয়ে থাকে। সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ট্রানজিস্টর, ভ্যাকুয়াম টিউব অথবা অপারেশনাল অ্যামপ্লিফায়ার এর সাথে প্যাসিভ কিছু উপাদান (যেমন- রেজিস্ট্রার, ক্যাপাসিটর, ইন্ডাক্টর) ব্যবহার করে তৈরি হয় অ্যমপ্লিফায়ার।

অ্যামপ্লিফায়ার সম্পর্কে আরও কিছু পোস্ট

চিত্রে একটি অ্যামপ্লিফায়ারের সাধারণ প্রতীক দেখানো হলো। এই চিত্র হতে তেমন কোন বিশদ ব্যাখ্যা বোঝা যায় না। তবে ইনপুট এবং আউটপুট এর একটি প্রবাহ চিত্র বোঝা যায়।


অ্যামপ্লিফায়ারের প্রকারভেদ

অপারেশন মুডের ওপর নির্ভর করে অ্যামপ্লিফায়ারকে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়। যা নিচে তুলে ধরা হলো।

(ক) ফ্রিকুয়েন্সি হিসেবে

  1. অডিও ফ্রিকুয়েন্সি অ্যামপ্লিফায়ার
  2. ভিডিও ফ্রিকুয়েন্সি অ্যামপ্লিফায়ার
  3. রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি অ্যামপ্লিফায়ার
  4. ইন্টারমিডিয়েট ফ্রিকুয়েন্সি অ্যামপ্লিফায়ার
  5.  ইউএইচএফ বা ভিএইচএফ অ্যামপ্লিফায়ার
  6. ডায়রেক্ট ফ্রিকুয়েন্সি অ্যামপ্লিফায়ার

(খ) বায়াসিং হিসেবে

  1. ক্লাস-এ অ্যামপ্লিফায়ার
  2. ক্লাস-বি অ্যামপ্লিফায়ার
  3. ক্লাস-সি অ্যামপ্লিফায়ার
  4. ক্লাস-এবি অ্যামপ্লিফায়ার

(গ) কাপলিং হিসেবে

  1. আরসি কাপল অ্যামপ্লিফায়ার
  2. এল সি কাপল অ্যামপ্লিফায়ার
  3. ট্রান্সফর্মার কাপল অ্যামপ্লিফায়ার
  4. ডাইরেক্ট কাপল অ্যামপ্লিফায়ার

(ঘ) লোড এর প্রকৃতির ভিত্তিতে

  1. আনটিউন্ড অ্যামপ্লিফায়ার
  2. টিউন্ড অ্যামপ্লিফায়ার

(ঙ) ইনপুট সিগন্যালের ধরন হিসেবে 

  1. স্মল সিগন্যাল অ্যামপ্লিফায়ার
  2. লার্জ সিগন্যাল অ্যামপ্লিফায়ার

(চ) আউটপুট হিসেবে

  1. ভোল্টেজ অ্যামপ্লিফায়ার
  2. কারেন্ট অ্যামপ্লিফায়ার
  3. পাওয়ার অ্যামপ্লিফায়ার

ভোল্টেজ অ্যামপ্লিফায়ার:

যে অ্যামপ্লিফায়ারের মাধ্যমে কোন দুর্বল সিগন্যালের ভোল্টেজকে বিবর্তন করা হয় তাকে ভোল্টেজ অ্যামপ্লিফায়ার বলে এটি মূলত এক ধরণের স্মল সিগন্যাল অ্যামপ্লিফায়ার।


পাওয়ার অ্যামপ্লিফায়ার:


উচ্চ মানের পাওয়ার আম্প্লিফিকেশন এর জন্য যে অ্যামপ্লিফায়ার ব্যবহৃত হয় তাকে পাওয়ার অ্যামপ্লিফায়ার বলে। এই ধরনের অ্যামপ্লিফায়ার লার্জ সিগনাল অ্যামপ্লিফায়ার হিসেবেও পরিচিত।


ক্লাস-এ অ্যামপ্লিফায়ার:


যে সকল অ্যামপ্লিফায়ার, ইনপুটে প্রদত্ত পূর্ণ সিগন্যালের জন্যই আউটপুট প্রদান করে তাকে ক্লাস-এ অ্যামপ্লিফায়ার বলে। অর্থাৎ ইনপুটে প্রদত্ত সিগন্যালের অবিকল সিগন্যাল বিবর্ধিত আকারে আউটপুটে পাওয়া যায়। এ অ্যামপ্লিফায়ার গুলো এমনভাবে বায়াস করা হয় যাতে ইনপুটের কোন অংশ বাদ না পরে। ক্লাস-এ অ্যামপ্লিফায়ারের সর্বোচ্চ দক্ষতা শতকরা ৫০ ভাগ।


ক্লাস-বি অ্যামপ্লিফায়ার:


যে সকল অ্যামপ্লিফায়ার ইনপুটে প্রদত্ত সিগন্যালের কেবলমাত্র হাফ সাইকেল বিবর্তিত করে তাদেরকে  ক্লাস বি অ্যামপ্লিফায়ার বলে। অর্থাৎ ইনপুট প্রদত্ত সিগন্যালের 180 ডিগ্রীর জন্য আউটপুট সিগন্যাল পাওয়া যায়। ক্লাস-বি অ্যামপ্লিফায়ারের দক্ষতা শতকরা ৫০ থেকে ৮০ ভাগ পর্যন্ত হতে পারে।



ক্লাস-সি এমপ্লিফায়ার:


এ অ্যামপ্লিফায়ারের আউটপুট ইনপুটে প্রদত্ত সিগন্যালের 180° এর চেয়ে কম সময় ধরে পাওয়া যায়। এই অ্যামপ্লিফায়ার ডিজাইন করার সময় এমনভাবে বায়াস করা হয় যাতে, ইনপুটে প্রদত্ত সিগন্যালের কিছু অংশ বাদ পরে। পাওয়ার অ্যামপ্লিফিকেশনের জন্য এ ধরনের  অ্যামপ্লিফায়ার কখনো ব্যবহার হয় না। তবে টিউন্ড অ্যামপ্লিফায়ার সার্কিট হিসেবে ব্যবহার করা হয়।


ক্লাস-এবি অ্যামপ্লিফায়ার:



যে অ্যামপ্লিফাইয়ার ইনপুটে প্রদত্ত সিগন্যালকে ১৮০ ডিগ্রী অপেক্ষা বেশি কিন্তু ৩৬০ ডিগ্রী এর চেয়ে কম সময় অ্যামপ্লিফাই করে তাকে ক্লাস-এবি অ্যামপ্লিফাইয়ার বলে। ক্লাস-এবি অ্যামপ্লিফাইয়ারের ক্রস ওভার ডিসটরশন কম হয়।


টিউন্ড অ্যামপ্লিফায়ার


যে অ্যামপ্লিফায়ারের মাধ্যমে কোন নির্দিস্ট ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ডের সিগন্যাল অ্যামপ্লিফাই করা হয় তাকে টিউন্ড অ্যামপ্লিফায়ার বলে।
বিভিন্ন প্রকার টিউন্ড অ্যামপ্লিফায়ার সম্পর্কে পরবর্তিতে আলোচনা করা হবে। তাছাড়া ট্রানজিস্টার ব্যবহার করে কিভাবেে এমপ্লিফায়ার ডিজাইন করতে হয় তা জানতে এই পোস্টটি দেখতে পারেন।

৯টি মন্তব্য:

  1. Tnx via,assa via,apnar prborti post gulo kmne pabo plz.bolben...

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. আমাদের সাথেই থাকুন শীঘ্রই আমাদের সাইটটি আরো আপডেট করা হবে

      মুছুন
  2. ধন্যবাদ। আশা করি আমার অন্য পোস্টগুলোও ভালো লাগবে।

    উত্তরমুছুন
  3. খুব সুন্দর হয়েছে কিন্তু এমপ্লিফায়ার কিভাবে কাজ করে এই সম্পর্কে একটু আলোচনা করলে খুব ভালো হইতো

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. ধন্যবাদ। খুব শিঘ্র এ বিষয়ে লেখার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

      মুছুন
  4. ক্লাস এ অ্যামপ্লিফায়ারের দক্ষতা ২৫% হবে মনে হয়

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. ক্লাস এ-অ্যামপ্লিফায়ার এর দক্ষতা ২৫-৫০ শতাংশ হতে পারে। ধন্যবাদ।

      মুছুন

Attention Please

Purpose of this blog
Learning and Sharing is the main purposeof this site. If you find anything helpful, please, share this blog to your friends to help them.

Our FB group AMIE Help Center
Our Another Site Voltage Facts