প্রযুক্তিগত দক্ষতার ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে

ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন

ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স

আজকের আলোচনায় যা যা থাকছে
০১। অল্টারনেটর কাকে বলে?
০২। অল্টারনেটরের মূলনীতি কি?
০৩। অল্টারনেটরের ই.এম.এফ সমীকরণ
০৪। অল্টারনেটরের প্যারালাল অপারেশনের শর্তসমূহ কি?
০৫। অল্টারনেটরের হান্টিং বলতে কি বুঝায়?
০৬। হান্টিং দূর করার উপায় কি?
০৭। অল্টারনেটরের ভোল্টেজ রেগুলেশন বলতে কি বুঝায়?
০৮। অল্টারনেটর সিনক্রোনাইজিং বলতে কী বোঝায়?
০৯। সিনক্রোনাইজিং কারেন্ট এবং সিনক্রোনাইজিং পাওয়ার বলতে কি?
১০। অল্টারনেটরের ফিল্ডকে ঘোরানোর সুবিধা কি?
১১। অল্টারনেটর সিনক্রোনাস স্পিড সমীকরণ



১। অল্টারনেটর কাকে বলে? অল্টারনেটরের মূলনীতি?

এসি জেনারেটরকে অল্টারনেটর বলে। অল্টারনেটর এমন ডিভাইস যা যান্ত্রিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তর করে। এতে আর্মেচার স্থির থাকে এবং ফিল্ড কয়েল কে ঘুরালে  ঘুরন্ত চৌম্বক ক্ষেত্র বা ফ্লাক্স আর্মেচার কন্ডাক্টরকে কর্তন করে। ফলে কন্ডাকটর এর মধ্যে এসি ই.এম.এফ আবিষ্ট হয়  যা লোডে সরবরাহ করা হয়


০২। অল্টারনেটরের মূলনীতি

একটি অল্টারনেটর মূলত ফিল্ড, আর্মেচার এবং এক্সাইটার এর সমন্বয়ে গঠিত। এখানে এক্সাইটার হচ্ছে একটি ডিসি সাপ্লাই যা ফিল্ডে চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য ব্যবহার করা হয়। ফিল্ডকে ঘুরানো হলে পরিবর্তনশীল চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রভাবে আর্মেচার কোরের উপর অবস্থিত পরিবাহীসমূহ ফ্লাক্স কর্তন করে এবং ফ্যারাডের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন নীতির মাধ্যমে পরিবাহীতে এসি ই.এম.এফ উৎপন্ন হয়।
অল্টারনেটর
অল্টারনেটর  বেসিক গঠন (ছবি উইকিপেডিয়া থেকে সংগ্রহকৃত)


০৩। অল্টারনেটরের ই.এম.এফ সমীকরণ:

মনে করি একটি অল্টারনেটরে
পোলের সংখ্যা = P টি,
প্রতি ফেজে পরিবাহীর সংখ্যা = Z টি,
প্রতি পোলে ফ্লাক্স = φ ওয়েবার,
ফ্রিকুয়েন্সি = f হার্জ,
প্যাচ সংখ্যা = T টি
রোটরের ঘূর্ণন গতি = N আর.পি.এম
ফর্ম ফ্যাক্টর = Kf,
ডিস্ট্রিবিউশন ফ্যাক্টর = Kd
পীচ ফ্যাক্টর = Kp

প্রতিটি কন্টাকটার এ উৎপাদিত গড় ই.এম.এফ = (dφ/dt) ভোল্ট.......(i)

রোটর প্রতিবার ঘূর্ণনে স্টেটরের প্রতিটি কন্ডাক্টর φP পরিমাণ ফ্লাক্স কর্তন করে।
সুতরাং ফ্লাক্সের পরিবর্তন, dφ = φP..........(ii)

আবার প্রতি মিনিটে রোটর N সংখ্যকবার ঘুরে, তাহলে রোটরের প্রতি ঘূর্ণনে প্রয়োজনীয় সময়, dt = 60/N..............(iii)

তাহলে প্রতি কন্ডাক্টরে গড় উৎপাদিত ই.এম.এফ,
(dφ/dt) = (φPN/60) ভোল্ট.............(iv)

আমরা জানি, f = PN/120
বা, N = 120f/P............(v)
(iv) নং এ এই মান বসিয়ে পাই
প্রতি কন্ডাক্টরে গড় উৎপাদিত ই.এম.এফ = (2φf ) ভোল্ট.............(vi)

প্রতি ফেজে Z সংখ্যক কন্ডাক্টর সিরিজে সংযুক্ত থাকায় প্রতি ফেজে গড় উৎপাদিত ই.এম.এফ. = (2φfZ ) ভোল্ট.............(vii)
একটি প্যাচে দুটি কন্ডাক্টর সিরিজে সংযুক্ত থাকে যা চিত্রে দেখানো হলো। তাই একটি প্যাচে ই.এম.এফ. হবে দুটি কন্ডাক্টরের ই.এম.এফ. এর যোগফল।

তাহলে উপরের সমীকরণটি দাঁড়ায়-
প্রতি ফেজে গড় উৎপাদিত ই.এম.এফ = (4φfT) ভোল্ট.............(viii)

E.M.F এর RMS মান = (1.11☓4φfT) = (4.44φfT) ভোল্ট
[ফর্ম ফ্যাক্টর, Kf = Erms/Eave = 1.11 ]

সুতরাং প্রকৃত E.M.F/ফেজ = (4.44φfT Kp Kd) ভোল্ট,
যেখানে, Kp ও Kd যথাক্রমে পীচ ফ্যাক্টর ও ডিস্ট্রিবিউশন ফ্যাক্টর


০৪। অল্টারনেটরের প্যারালাল অপারেশনের শর্তসমূহ কি?

অল্টারনেটর প্যারালাল অপারেশন শর্ত সমূহ নিম্নরূপঃ
  • টার্মিনাল ভোল্টেজ হতে হবে
  • ফেজ সিক্যুয়েন্স এক হতে হবে
  • ফ্রিকুয়েন্সি সমাল হতে হবে
  • পোলারিটি এক হতে হবে

০৫। অল্টারনেটরের হান্টিং বলতে কি বুঝায়?

একাধিক অল্টারনেটর যখন প্যারালাল অপরেশনের চলে তখন তাদের টার্মিনাল ভোল্টেজ সমান থাকে। যদি কোনো কারনে একটি অল্টারনেটরের ভোল্টেজ কোন এক মুহূর্তের জন্য কমে যায় তবে অন্য মেশিন ভোল্টেজ তাৎক্ষণিকভাবে বেড়ে যায় এবং কারেন্ট কম ভোল্টেজ যুক্ত মেশিনের ভেতরে ঢুকে যায় ফলে। অল্টারনেটরে হান্টিং সৃষ্টি হয়। তাছাড়া ফ্রিকুয়েন্সি সূক্ষ্ম হ্রাস-বৃদ্ধির কারণেও হান্টিং এর সৃষ্টি হয়।


০৬। হান্টিং দূর করার উপায় কি?

  • হান্টিং দূর করার উপায় গুলো হলোঃ
  • ডাম্পার ওয়াইন্ডিং ব্যবহার করা
  • হেভি ফ্লাই হুইল ব্যবহার করা
  • প্রাইম মুভার এর গর্ভারনরে ডসপোট ব্যবহার করা

০৭। অল্টারনেটরের ভোল্টেজ রেগুলেশন বলতে কি বুঝায়?

অল্টারনেটরের নো-লোড ভোল্টেজ এবং ফুল লোড ভোল্টেজের পার্থক্যকে নো-লোড ভোল্টেজের শতকরায় প্রকাশ করলে, তাকে অল্টারনেটরের ভোল্টেজ রেগুলেশন বলে।


ভোল্টেজ রেগুলেশন সম্পর্কিত পোস্ট:



০৮। অল্টারনেটর সিনক্রোনাইজিং বলতে কী বোঝায়?

বর্ধিত লোডের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে দুই বা ততোধিক অল্টারনেটরকে নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে প্যারালাল অপারেশনের মাধ্যমে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পদ্ধতিকে অল্টারনেটর সিনক্রোনাইজিং বলে।


০৯। সিনক্রোনাইজিং কারেন্ট এবং সিনক্রোনাইজিং পাওয়ার বলতে কি?

অল্টারনেটর প্যারালাল অপারেশনে চলার সময় একটির গতিবেগ কিছুটা কমে গেলে অন্য অল্টারনেটরে লোড কারেন্ট ছাড়াও কিছুটা অতিরিক্ত কারেন্ট উৎপন্ন হয়। এই কারেন্ট বাস বারের মাধ্যমে কম গতিতে চলা মেশিনের আর্মেচারে প্রবেশ করে এর গতি বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে বেশি গতিতে চলা মেশিনটির গতি সামান্য হ্রাস পায়। তাই এই কারেন্টকে সিনক্রোনাইজিং কারেন্ট বলে। আর সিনক্রোনাইজিং কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার ফলে যে পাওয়ার লস হয় তাকে সিনক্রোনাইজিং পাওয়ার পর।


১০। অল্টারনেটরের ফিল্ডকে ঘোরানোর সুবিধা কি?

  • আর্মেচার ওয়াইন্ডিং বড় ও ভারী হওয়ায় একে ঘোরানোর জন্য বড় ধরনের প্রাইম মুভার প্রয়োজন
  • উচ্চ ভোল্টেজে আর্মেচার ওয়াইন্ডিং স্থির রেখে ইন্সুলেশন করা সহজ
  • স্থির অবস্থায় আর্মেচার ওয়াইন্ডিং ঠান্ডা রাখা সহজ
  • ঘুরন্ত আর্মেচার ওয়াইন্ডিং হতে স্লিপ রিং ও কার্বন ব্রাশের মাধ্যমে উচ্চ ভোল্টেজ সংগ্রহ করা বেশ জটিল


১১। অল্টারনেটর সিনক্রোনাস স্পিড সমীকরণ

ধরি, P সংখ্যক পোল বিশিষ্ট একটি অল্টারনেটরের রোটর Ns আর পি এম গতিতে ঘুরছে।

যেহেতু প্রতি 2 টি পোল অতিক্রম করার ফলে একটি পূর্ণাঙ্গ ইলেকট্রিক্যাল সাইকেল উৎপন্ন হয়। সুতরাং

সাইকেল/রোটেশন $= P/2$

আবার প্রতি সেকেন্ডে রোটেশন $= {N_s}/60$

সুতরাং প্রতি সেকেন্ডে ইলেকট্রিক্যাল সাইকেলের সংখ্যা, 

$f = {PN_s}/120$
$বা,\ Ns = 120f/P$
এটিই অল্টারনেটর সিনক্রোনাস স্পিড সমীকরণ

৪টি মন্তব্য:

Attention Please

Purpose of this blog
Learning and Sharing is the main purposeof this site. If you find anything helpful, please, share this blog to your friends to help them.

Our FB group AMIE Help Center
Our Another Site Voltage Facts