প্রযুক্তিগত দক্ষতার ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে

ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন

ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স

ইন্টার্নেট অফ থিংস সম্পর্কে বাংলা ভাষায় তেমন কোন লেখা নেই। তাই চিন্তা করেছি ধারাবাহিকভাবে এটি সম্পর্কে কিছু লিখব। আশাকরি লেখাগুলো সামান্য হলেও কাজে আসবে নবীনদের।

ইন্টার্নেট অফ থিংস সম্পর্কে ধারাবাহিক পোস্টের আজকের পোস্টে শুধু প্রাথমিক ধারণা দিব।

সহজ ভাষায়  আই ও টি বলতে বোঝায় দূর হতে অর্থাৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন কিছুর মান পর্যবেক্ষণ করা অথবা কোন যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা। বাস্তব অর্থে ইন্টারনেট অথবা এ জাতীয় কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে দূর হতে বিভিন্ন প্রকারের সেন্সরের মাধ্যমে এর পারিপার্শিক বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ, কোন যন্ত্রের বিভিন্ন অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করা যায় এই টেকনোলজির মাধ্যমে।

 বাড়ির দরজা জানালা থেকে শুরু করে কৃত্রিম উপগ্রহ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা হয় ইন্টারনেটের মাধ্যমে। তাই বর্তমান যুগকে ইন্টার্নেট অফ থিংস এর যুগ বলা হলেও ভুল হবেনা।


দু একটি উদাহরণ দিলে হয়তো বিষয়টি স্বচ্ছ হবে। প্রথম উদাহরণটি হচ্ছে এটিএম বুথ। এটিএম বুথ চিনেনা এমন কেউ হয়তো আমার আর্টিকেলটি পড়বেন না। এটিএম বুথ ব্যবহার করে আমরা যেমন আমাদের হিসাবের অবস্থা জানতে পারি, টাকা তুলতে পারি তেমনি এই বুথ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানও এর সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কেও দূর হতেই অবগত থাকে।

আইওটির একটি উদাহরণ থেকে অন্যটি ছাড়িয়ে যায়। রিমোট ওয়ার্কিং এখন আর অপরিচিত কিছু নয় আমাদের কাছে। ইন্টার্নেট অফ থিংস এ ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারলে ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল হবে তা সহজেই অনুমেয়।

আইওটি প্রজেক্ট করতে কি কি লাগে

প্রাথমিক ভাবে চিন্তা করলে যে ডিভাইসটি নিয়ন্ত্রণ করতে চাই সেটি এবং ওয়েব পেজ ব্রাউজ করা যায় এমন একটি ডিভাইস এদুটি হলেই চলে। এক্ষেত্রে যে ডিভাইসটি নিয়ন্ত্রণ করতে চাই সেটি অবশ্যই ইন্টারনেটের মাধ্যমেই ডাটা আদান প্রদান করতে সক্ষম হতে হবে। একটি আইওটি প্রজেক্ট করতে প্রয়োজনীয় বিষয় গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।

১। যেসকল ডিভাইস নিয়ন্ত্রন করতে হবে ( লোড ডিভাইস )
২। সেন্সর বা সেন্সর এ্যারে 
৩। কমিউনিকেশন সিস্টেম
৪। ডাটা প্রসেসর ও সুইচ কন্ট্রোলার ( মাইক্রোকন্ট্রোলার বা মাইক্রোকম্পিউটার )
৫। রিয়েল টাইম অপারেটিং সিস্টেম
৬। কোডিং ল্যাঙ্গুয়েজ এবং কোডিং এনভায়রনমেন্ট বা IDE
৭। রিয়েল-টাইম ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম
৮। কন্ট্রোলিং অ্যাপ্লিকেশন

প্রজেক্ট তৈরি করার আগে লোড ও সেন্সর সমপর্কে স্বচ্ছ ধারনা থাকতে হবে। দূর হতে লোড নিয়ন্ত্রনের সময় সেন্সরের মাধ্যমে যত বেশি ডেটা সংগ্রহ করা যায় লোডের অবস্থা সম্পর্কে তত ভাল ধারনা পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে লোডের সাথে সম্পর্কযুক্ত সেন্সর ব্যবহার করা হয়।

টার্গেট ডিভাইস বা প্রজেক্ট স্থানীয় না আন্তর্জাতিকভাবে নিয়ন্ত্রন করা হবে তার উপর ভিত্তি করে কমিউনিকেশন সিস্টেম নির্ধারণ করা হয়। প্রজেক্ট যদি স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাহলে এটি লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক এর সাথে সংযুক্ত থাকলেই যথেষ্ট। আবার পৃথিবীর যেকোন জায়গা থেকে নিয়ন্ত্রণ করার ইচ্ছা থাকলে অবশ্যই ইন্টারনেট যুক্ত থাকতে হবে। এক্ষেত্রে  সাধারণত ওয়াইফাই, জিপিআরএস অথবা ইথারনেট কমিউনিকেশন সিস্টেম পছন্দের তালিকায় থাকে।

ডাটা প্রসেসর ও কন্ট্রোল হিসেবে সাধারণত মাইক্রোকন্ট্রোলার অথবা মাইক্রো কম্পিউটার পছন্দের তালিকায় থাকে। কারণ এতে খরচ অনেকটাই সহজলভ্য হয়। সার্বক্ষণিক কমিউনিকেশন বজায় রাখার জন্য এতে ইন্সটল করা অপারেটিং সিস্টেম সাধারণত রিয়েল-টাইম অপারেটিং সিস্টেম হয়ে থাকে।

মাইক্রো কম্পিউটার বা মাইক্রোকন্ট্রোলার প্রোগ্রামিং এর জন্য একটি প্রোগ্রামিং এনভায়রনমেন্ট প্রয়োজন। নির্দিষ্ট প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজের মাধ্যমে এই এনভায়রনমেন্ট মাইক্রোকন্ট্রোলার এর প্রোগ্রাম আপলোড করা হয়। প্রোগ্রামিংয়ের হাতেখড়ি হিসেবে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ সি/সি++ খুবই জনপ্রিয়।

দূর হতে লোড মনিটর এবং নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি কন্ট্রোলিং অ্যাপ্লিকেশন প্রয়োজন। এই কন্ট্রোলিং অ্যাপ্লিকেশন অপারেটিং সিস্টেম নিরপেক্ষ হলে ভালো হয়। সে ক্ষেত্রে ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন জনপ্রিয়।

আইওটির  মাধ্যমে করা যায় এমন কয়েকটি শখের বা হবি প্রজেক্ট এর ধারণা নিচে উল্লেখ করা হলো-

১।  আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা
২। স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়ার প্রতিবেদন তৈরি
৩। স্মার্ট গ্যারেজ
৪। বায়ু দূষণ পর্যবেক্ষণ
৫। গ্যাস লিক পর্যবেক্ষণ
৬। বন্যার অবস্থা পর্যবেক্ষণ
৭। আধুনিক সেচ প্রকল্প
৮। রাস্তার বাতি পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ
৯। পানির বিশুদ্ধতা যাচাই ও পর্যবেক্ষণ
১০। ট্রাফিক লাইট এর তথ্য জানা
১১। ট্রাফিক লাইট নিয়ন্ত্রণ
১২। ফেস ডিটেকশন দরজা
১৩। তরলের স্তর পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ
১৪। আধুনিক পারকিং সিস্টেম
১৫। স্মার্ট চাবি বা মানিব্যাগ ট্র্যাকার
১৬। স্মার্ট স্টোর ট্রলি
১৭। মাটির আর্দ্রতা পর্যবেক্ষণ
১৮। সেলসম্যান ছাড়া বিক্রয় সেবা

এ পর্বে তাত্ত্বিক কিছু বিষয় তুলে ধরলাম যাতে আগামী পর্বে ব্যবহারিক বিষয়গুলো তুলে ধরলে বুঝতে সহজ হয়। ইন্টার্নেট অফ থিংস এর দ্বিতীয় পর্ব পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে এই পর্ব এখানেই শেষ করছি।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Attention Please

Purpose of this blog
Learning and Sharing is the main purposeof this site. If you find anything helpful, please, share this blog to your friends to help them.

Our FB group AMIE Help Center
Our Another Site Voltage Facts